লোভ হিংসা ত্যাগে ,দানে পাবে শান্তি
দুনিয়ার মোহ
ঘুচে ,দূর হবে ভ্রান্তি।
দানেই
তৃপ্তি , দানেই সুখ।
দানেই দেখবে
, প্রিয়জনের হাসি মুখ।
যারা সোনা,
রূপা জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে না, তাদের কঠিন আযাবের সংবাদ দাও।
(সূরাঃ আত্-তাওবাহ ৩৪ আয়াত)
আল্লাহর রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন , আল্লাহ তোমাদের তিনটি কাজ অপছন্দ করেন- (১)
অনর্থক কথাবার্তা, (২) সম্পদ নষ্ট করা এবং (৩) অত্যধিক সওয়াল করা।
মহান আল্লাহর
বাণীঃ ‘‘হে মু’মিনগণ!
তোমরা যা উপার্জন কর এবং আমি যা ভূমি হতে তোমাদের জন্য উৎপাদন করে দেই, তন্মধ্যে যা
উৎকৃষ্ট, তা ব্যয় কর, তা হতে নিকৃষ্ট বস্তু দান করার ইচ্ছা কর না। (কেননা) তোমরা নিজেরাও
তো ঐরূপ বস্তু (কারো নিকট হতে) ভ্রুকুঞ্চিত না করে নিতে চাও না এবং জেনে রেখ, নিশ্চয়ই
আল্লাহ মহাসম্পদশালী, প্রশংসিত।’’
(আল-বাকারাঃ ২৬৭)
‘‘তোমরা
যা ভালবাস তা হতে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনো পুণ্য লাভ করবে না’’- (আল ইমরানঃ ৯২)।
কেউ নিজস্ব
মাল থেকে অভাবগ্রস্ত নিকটাত্মীয়দেরকে যাকাত দিলে অধিক পুণ্য লাভ করবে।
মযলুমের বদদু‘আকে ভয় করবে। কেননা, তার (বদদু‘আ) এবং আল্লাহর মাঝে কোন পর্দা থাকে
না।
কেননা, যে
ব্যক্তি নিজের সাদাকা ফিরিয়ে নেয় সে যেন নিজের বমি পুনঃ ভক্ষণ করে।
‘আয়িশাহ্
(রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ স্ত্রী তার স্বামীর খাদ্য সামগ্রী সাদাকা করলে সে সাদাকা করার সওয়াব পাবে, উপার্জন
করার কারণে স্বামীও এর সওয়াব পাবে এবং খাজাঞ্চীও অনুরূপ সওয়াব পাবে।
নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃনিকটাত্মীয়দেরকে যাকাত দেয়া, এরূপ দাতার দ্বিগুণ সওয়াব। আত্মীয়কে
দান করার সওয়াব এবং যাকাত দেয়ার সওয়াব।
আবূ হুরাইরাহ
(রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রতিদিন সকালে দু’জন ফেরেশতা অবতরণ করেন। তাঁদের একজন
বলেন, হে আল্লাহ! দাতাকে তার দানের উত্তম প্রতিদান দিন আর অপরজন বলেন, হে আল্লাহ! কৃপণকে
ধ্বংস করে দিন। (মুসলিম ১২/১৭, হাঃ ১০১০)
আবূ মূসা আশ‘আরী (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ প্রতিটি মুসলিমের সাদাকা করা উচিত। সাহাবীগণ আরয করলেন, কেউ যদি সাদাকা দেয়ার মত কিছু না পায়? (তিনি উত্তরে) বললেনঃ সে ব্যক্তি নিজ হাতে কাজ করবে এতে নিজেও লাভবান হবে, সাদাকাও করতে পারবে। তাঁরা বললেন, যদি এরও ক্ষমতা না থাকে? তিনি বললেনঃ কোন বিপদগ্রস্তকে সাহায্য করবে। তাঁরা বললেন, যদি এতটুকুরও সামর্থ্য না থাকে? তিনি বললেনঃ এ অবস্থায় সে যেন সৎ ‘আমল করে এবং অন্যায় কাজ হতে বিরত থাকে। এটা তার জন্য সাদাকা বলে গণ্য হবে।
আনাস (রাঃ)
হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর প্রতি
যাকাতের যে বিধান দিয়েছেন তা আবূ বকর (রাঃ) তাঁর নিকট লিখে পাঠান। তাতে রয়েছেঃ অধিক
বয়সে দাঁত পড়া বৃদ্ধ ও ত্রুটিযুক্ত বকরী এবং পাঁঠা যাকাত হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না,
তবে যাকাত প্রদানকারী শেষোক্ত প্রাণী তথা পাঁঠা ইচ্ছা করলে দিতে পারেন।
ইবনু ‘আব্বাস
(রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মু‘আয (ইবনু জাবাল) (রাঃ)-কে শাসনকর্তা হিসেবে ইয়ামান দেশে পাঠান, তখন বলেছিলেনঃ
তুমি আহলে কিতাব লোকদের নিকট যাচ্ছো। সেহেতু প্রথমে তাদের আল্লাহর ‘ইবাদাতের দাওয়াত
দিবে। যখন তারা আল্লাহর পরিচয় লাভ করবে, তখন তাদের তুমি বলবে যে, আল্লাহ দিন-রাতে তাদের
উপর পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরজ করে দিয়েছেন। যখন তারা তা আদায় করতে থাকবে, তখন তাদের জানিয়ে
দিবে যে, আল্লাহ তাদের উপর যাকাত ফরজ করেছেন, যা তাদের ধন-সম্পদ হতে গ্রহণ করা হবে
এবং তাদের দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করে দেয়া হবে। যখন তারা এর অনুসরণ করবে তখন তাদের
হতে তা গ্রহণ করবে এবং লোকের উত্তম[1] মাল গ্রহণ করা হতে বিরত থাকবে। (১৩৯৫, মুসলিম
১/৭, হাঃ ১৯, আহমাদ ২০৭১)
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলিমের উপর তার ঘোড়া ও গোলামের কোন যাকাত নেই। (১৪৬৪, মুসলিম ১২/২, হাঃ ৯৮২, আহমাদ ৭২৯৯)
হাসান (বসরী)
(রহ.) বলেন, কেউ যাকাতের অর্থ দিয়ে তার পিতাকে ক্রয় করলে তা জায়িয হবে। আর মুজাহিদ্বীন
এবং যে হাজ্জ করেনি (তাকে হাজ্জ করার জন্য) তাদেরও (যাকাত) দিবে। অতঃপর তিনি তিলাওয়াত
করেন (আল্লাহর বাণীঃ) ‘‘যাকাত পাবে দরিদ্রগণ’’-
(আত্-তওবা)
আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, কিছু
সংখ্যক আনসারী সাহাবী আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট কিছু
চাইলে তিনি তাঁদের দিলেন, পুনরায় তাঁরা চাইলে তিনি তাঁদের দিলেন। এমনকি তাঁর নিকট যা
ছিল সবই শেষ হয়ে গেল। এরপর তিনি বললেনঃ আমার নিকট যে মাল থাকে তা তোমাদের না দিয়ে আমার
নিকট জমা রাখি না। তবে যে চাওয়া হতে বিরত থাকে, আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রাখেন আর যে পরমুখাপেক্ষী
না হয়, আল্লাহ তাকে অভাবমুক্ত রাখেন। যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করে, আল্লাহ তাকে সবর দান
করেন। সবরের চেয়ে উত্তম ও ব্যাপক কোন নি‘আমত
কাউকে দেয়া হয়নি। ( মুসলিম ১২/৪২, হাঃ ১০৫৩, আহমাদ ১১৮৯০)
আল্লাহর বাণী, তাদের (ধনীদের) সম্পদে হক রয়েছে যাচ্ঞাকারী ও বঞ্চিতের। (আয্-যারিয়াতঃ ১৯)
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যার হাতে আমার জীবন, সেই সত্তার কসম! তোমাদের মধ্যে কারো রশি নিয়ে কাঠ সংগ্রহ করে পিঠে করে বয়ে আনা, কোন লোকের কাছে এসে চাওয়া অপেক্ষা অনেক ভাল, চাই সে দিক বা না দিক।
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সব সময় মানুষের কাছে চেয়ে থাকে, সে কিয়ামতের দিন এমনভাবে উপস্থিত হবে যে, তার চেহারায় কোন গোশ্ত থাকবে না।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর বাণীঃ ‘‘এবং এতটুকু পরিমাণ সম্পদ তার কাছে নেই, যা তাকে অভাবমুক্ত করতে পারবে।’’ (আল্লাহ বলেন) এ ব্যয় ঐ সব অভাবগ্রস্ত লোকদের জন্য যারা আল্লাহর পথে এমনভাবে ব্যাপৃত হয়ে পড়েছে যে, তারা জীবিকার সন্ধানে যমীনে ঘোরাফেরা করতে পারে না। ভিক্ষা না করার দরুন অজ্ঞ লোকেরা তাদের অভাবমুক্ত বলে মনে করে। তাদের লক্ষণ দেখলেই তুমি তাদের চিনতে পারবে। কাকুতি-মিনতি করে তারা মানুষের কাছে ভিক্ষা চায় না। 'আর যে সম্পদ তোমরা ব্যয় কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা সবিশেষ অবহিত।'(আল-বাকারাহঃ ২৭৩)
সে-ই প্রকৃত মিসকীন যার কোন সম্পদ নেই, অথচ সে (চাইতে) লজ্জাবোধ করে অথবা লোকদেরকে আঁকড়ে ধরে যাচ্ঞা করে না। ( মুসলিম ১২/৩৪, হাঃ ১০৩৯, আহমাদ ৮১৯৪)
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, প্রকৃত মিসকীন সে নয় যে মানুষের কাছে ভিক্ষার জন্য ঘুরে বেড়ায় এবং এক-দু’ লুকমা অথবা এক-দু’টি খেজুর পেলে ফিরে যায় বরং প্রকৃত মিসকীন সেই ব্যক্তি, যার এতটুকু সম্পদ নেই যাতে তার প্রয়োজন মিটতে পারে এবং তার অবস্থা সেরূপ বোঝা যায় না যে, তাকে দান খয়রাত করা যাবে আর সে মানুষের কাছে যাচ্ঞা করে বেড়ায় না।
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'তোমাদের কেউ যদিরশি নিয়ে সকাল বেলা বের হয়, (রাবী বলেন) আমার ধারণা যে, তিনি বলেছেন, পাহাড়ের দিকে, অতঃপর লাকড়ী সংগ্রহ করে এবং তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে এবং দানও করে, তা তার পক্ষে লোকের কাছে যাঞ্চা করার চেয়ে উত্তম। '
‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বৃষ্টি ও প্রবাহিত পানি দ্বারা সিক্ত ভূমিতে উৎপাদিত ফসল বা সেচ ব্যতীত উর্বরতার ফলে উৎপন্ন ফসলের উপর (দশমাংশ) ‘উশর ওয়াজিব হয়। আর সেচ দ্বারা উৎপাদিত ফসলের উপর অর্ধ (বিশ ভাগের এক ভাগ) ‘উশর।
আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পাঁচ ওয়াসাক-এর কম উৎপন্ন দ্রব্যের যাকাত নেই এবং পাঁচটির কম উটের যাকাত নেই। এমনিভাবে পাঁচ উকিয়ার কম পরিমাণ রৌপ্যেরও যাকাত নেই।
নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর উক্তিঃ ব্যবহারযোগ্য
না হওয়া পর্যন্ত ফল বিক্রয় করবে
না, কাজেই ব্যবহারযোগ্য হওয়ার পর কাউকেও বিক্রি
করতে নিষেধ করেননি এবং কার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে আর কার উপর
ওয়াজিব হবে না, তা নির্দিষ্ট করেননি।
‘‘তাদের সম্পদ হতে সাদাকা গ্রহণ করবেন, এর দ্বারা তাদেরকে পবিত্র ও পরিশোধিত করবেন। আপনি তাদের জন্য দু‘আ করবেন, আপনার দু‘আ তাদের জন্য চিত্ত স্বস্তিকর।’’ (আত্-তওবাঃ ১০৩)
ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেজুর ব্যবহারযোগ্য না হওয়া পর্যন্ত বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। যখন তাঁকে ব্যবহারযোগ্যতা সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করা হলো, তখন তিনি বললেনঃ ফল নষ্ট হওয়া হতে নিরাপদ হওয়া।
অন্যের সাদাকাকৃত বস্তু ক্রয় করতে কোন দোষ নেই। কেননা, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবিশেষভাবে সাদাকা প্রদানকারীকে তা ক্রয় করতে নিষেধ করেছেন, অন্যকে নিষেধ করেননি।
নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-ও তাঁর বংশধরদেরকে সদাকাহ গ্রহণ করেন না।
এ প্রসঙ্গে আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদিসে তিনি বলেন, হাসান ইবনু ‘আলী (রাঃ) সাদাকার একটি খেজুর নিয়ে মুখে দিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা ফেলে দেয়ার জন্য ওয়াক ওয়াক (বমির পূর্বের আওয়াজের মত) বললেন। অতঃপর বললেনঃ তুমি কি জান না যে, আমরা সাদাকা ভক্ষণ করি না!'
আনাস
(রাঃ) হতে বর্ণিত যে, বারীরাহ (রাঃ)-কে সাদাকাকৃত মাংসের
কিছু আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে দেয়া হল।
তিনি বললেন, তা বারীরাহ’র
জন্য সাদাকা এবং আমাদের জন্য হাদিয়া।
ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রত্যেক গোলাম, আযাদ, পুরুষ, নারী, প্রাপ্ত বয়স্ক, অপ্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিমের উপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সদাকাতুল ফিতর হিসেবে খেজুর হোক অথবা যব হোক এক সা’ পরিমাণ আদায় করা ফারয করেছেন এবং লোকজনের ঈদের সালাতের বের হবার পূর্বেই তা আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। ( মুসলিম ১২/৪, হাঃ ৯৮৪, আহমাদ ৫১৭৪)
ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, মুসলিমদের প্রত্যেক আযাদ, গোলাম পুরুষ ও নারীর পক্ষ হতে সদাকাতুল ফিত্র হিসেবে খেজুর অথবা যব-এর এক সা‘ পরিমাণ[1] আদায় করা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরজ করেছেন।
আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা এক সা‘ পরিমাণ খাদ্য অথবা এক সা‘ পরিমাণ যব অথবা এক সা‘ পরিমাণ খেজুর অথবা এক সা পরিমাণ পনির অথবা এক সা‘ পরিমাণ কিসমিস দিয়ে সদাকাতুল ফিত্র আদায় করতাম।
আবদুল্লাহ) ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদেরকে ঈদের সালাতের উদ্দেশে বের হওয়ার পূর্বেই[1] সদাকাতুল ফিত্র আদায় করার নির্দেশ দেন।
নগদ টাকা, সোনা, রূপা ইত্যাদির যাকাতঃ সোনাঃ ২০ দিনার বা ৮৫ গ্রাম ওজনের অর্থাৎ সাড়ে সাত তোলা সোনা হলে তাতে ৪০ ভাগের ১ ভাগ অর্থাৎ শতকরা আড়াই ভাগ। রূপাঃ এটা যখন ৫৯৫ গ্রাম অর্থাৎ সাড়ে বায়ান্ন তোলা হবে তখন শতকরা আড়াই ভাগ যাকাত দিতে হবে-(বুখারী, মুসলিম)।
নগদ টাকাঃ এটা সোনা বা রূপা যে
কোন একটির নিসাব পরিমাণ নগদ টাকা থাকলেই যাকাতদিতেহবে শতকরা আড়াই ভাগ। (বুখারী)
উলামাদের ফাতাওয়া অনুযায়ী টাকার ক্ষেত্রে স্বর্ণের নিসাবের অপেক্ষা না করে গরীব-মিসকীনের হক্বকে অগ্রাধিকার দিয়ে রূপার নিসাব অনুযায়ী যাকাত প্রদান করাই উত্তম।
আর তোমরা ফসলের হকসমূহ আদায় কর যেদিন ফসল কর্তন কর সেদিনই- (সূরা আন-আম ১৪১)।
রসূল (সঃ) বলেছেন, যে ফসল বৃষ্টির পানিতে ও ভূ-গর্ভস্থ পানিতে উৎপন্ন হয় তার উপর ১০ ভাগের ১ ভাগ যাকাত দিতে হবে। আর যে ফসল সেচের দ্বারা উৎপন্ন হয় তাতে ২০ এর ১ ভাগ যাকাত দিতে হয়। (বুখারী)
গবাদি পশুর মধ্যে শামিল হবে গরু, ছাগল, উট ইত্যাদি গৃহপালিত পশু। তবে এতে শর্ত হল এগুলো মাঠে চরা পশু হতে হবে এবং এগুলি দুধ কিংবা আর্থিক লাভের জন্য পালন করা হতে হবে। আর তাদের নিসাব পূর্ণ হতে হবে। মাঠে চরার শর্ত হল, সমস্ত বছর বা বছরের বেশীর ভাগ সময় চরতে হবে। যদি তা না হয় তাহলে যাকাত দিতে হবে না।
উটের সর্বনিম্ন
পরিমাণ হল ৫টি। এর
যাকাত দিতে হবে ১টি ছাগল।
গরুর সর্বনিম্ন নিসাব হল ৩০টি। এর যাকাত দিতে হবে ১ বছরের ১টি বাছুর।
ছাগলের সর্বনিম্ন
নিসাব হল ৪০টি। এর
যাকাত দিতে হবে ১টি ছাগল। কিন্তু ব্যবসার জন্য যদি তাদের পালন করা হয় তবে তা
মাঠেই চরানো হোক কিংবা ঘরেই ঘাস খাক, তার যাকাত হবে মূল্য হিসাবে।
ওয়াসাল্লাম অপ্রাপ্ত বয়স্ক, প্রাপ্ত বয়স্ক, আযাদ ও গোলাম প্রত্যেকের পক্ষ হতে এক সা‘ যব অথবা এক সা‘ খেজুর সদাকাতুল ফিত্র হিসেবে আদায় করা ফরজ করে দিয়েছেন।
ইবনু
‘উমার (রাঃ) প্রাপ্ত বয়স্ক ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক
সকলের পক্ষ হতেই সদাকাতুল ফিত্র আদায় করতেন, এমনকি আমার সন্তানদের পক্ষ হতেও সাদাকার দ্রব্য গ্রহীতাদেরকে দিয়ে দিতেন এবং ঈদের এক-দু’ দিন
পূর্বেই আদায় করে দিতেন।
আপনারে লয়ে
বিব্রত রহিতে , আসে নাহি কেহ অবনী পরে। সকলের
তরে সকলে আমরা , প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।
No comments:
Post a Comment