Saturday 16 September 2023

আল্লাহ তুমি সবচে আপন সবচে প্রিয় জন।

 আল্লাহ তুমি সবচে আপন সবচে প্রিয় জন। ঈমান মজবুত করে,সৎ পথে চলার শক্তি বাড়িয়ে দিয়েছ আল্লাহ তুমিই। 

তোমার প্রতি  আনুগত্য আরও বৃদ্ধি পাওয়া , অধিক হিদায়াত দান এ তোমারই দয়া ।আল্লাহর জন্য ভালবাসা ও আল্লাহর জন্য ঘৃণা করা ঈমানেরই  অংশ। আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের ঈমান মজবুত থেকে আরো মজবুত করে দেন। ছোট-বড় সব পাপ থেকে তাদেরকে দূরে রাখেন।

ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বলেন, ’ইয়াকীন হল পূর্ণ ঈমান। ইবনু ’উমার (রাঃ) বলেন, ’বান্দা প্রকৃত তাকওয়ায় পৌঁছতে পারে না, যতক্ষণ পর্যন্ত সে, মনে যে বিষয় সন্দেহের সৃষ্টি করে, তা পরিত্যাগ না করে। তাই আমাদের উচিত সকল হালাল গ্রহণ করা , হারাম বর্জন করা আর সন্দেহ সৃষ্টিকারী বিষয় পরিত্যাগ করা।

আল্লাহ্ তাআলার বাণীঃ ’’কোন পুণ্য নেই পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফেরানোতে; কিন্তু পুণ্য আছে কেউ ঈমান আনলে আল্লাহর উপর, আখিরাতের উপর, ফেরেশতাদের উপর, সকল কিতাবের উপর, আর সকল নবী-রাসূলদের উপর, এবং অর্থ দান করলে আল্লাহর  প্রেমে-- আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতিম, মিসকীন, মুসাফির, সাহায্যপ্রার্থী এবং দাস মুক্তির জন্য, সালাত কায়িম করলে, যাকাত দিলে, কৃত প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করলে আর অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধ বিভ্রাটে ধৈর্যধারণ করলে। এরাই হল প্রকৃত সত্যপরায়ণ, আর এরাই মুত্তাকী’’- (আল-বাক্বারাহ ২/১৭৭)।

লজ্জা হচ্ছে ঈমানের একটি শাখা। (মুসলিম ১/১২ হাঃ৩৫). তাই ছেলে -মেয়ে নির্বিশেষে আমাদের সবাইকে লজ্জাশীল হতে হবে।

আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, সে-ই মুসলিম, যার জিহবা ও হাত হতে সকল মুসলিম নিরাপদ এবং সে-ই প্রকৃত মুহাজির, আল্লাহ যা নিষেধ করেছেন তা সে ত্যাগ করে। (৬৪৮৪; মুসলিম ১/১৪ হাঃ ৪০, আহমাদ ৬৭৬৫)

ঈমানদার হলে তুমি খাদ্য খাওয়াবে ও চেনা অচেনা সকলকে সালাম দিবে। (২৮, ৬২৩৬; মুসলিম ১/১৪ হাঃ ৪২, আহমাদ ৬৭৬৫).

নিজের জন্য যা পছন্দ কর,  সেটা স্বীয় ভাইদের জন্যও পছন্দ করা ঈমানের অংশ. আল্লাহ্‌র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে ভালোবাসা ঈমানের অন্তর্ভুক্ত।

আনাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনটি গুণ যার মধ্যে আছে, সে ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করতে পারেঃ ১। আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল তার নিকট অন্য সকল কিছু হতে অধিক প্রিয় হওয়া; ২। কাউকে একমাত্র আল্লাহর জন্যই ভালবাসা; ৩। কুফরীতে প্রত্যাবর্তনকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হবার মত অপছন্দ করা। (২১, ৬০৪১, ৬৯৪১; মুসলিম ১/১৫ হাঃ ৪৩, আহমাদ ১২০০২)

আনসারকে ভালোবাসা ঈমানের আলামত।

উবাদাহ ইবনু সামিত (রাযি.) যিনি বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী ও লায়লাতুল ‘আকাবার একজন নকীব ‘উবাদাহ ইবনুস সামিত (রাযি.) বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পাশে একজন সাহাবীর উপস্থিতিতে তিনি বলেনঃ তোমরা আমার নিকট এই মর্মে বায়আত  গ্রহণ কর যে, আল্লাহর সঙ্গে কোন কিছুকে অংশীদার সাব্যস্ত করবে না, চুরি করবে না, ব্যভিচার করবে না, তোমাদের সন্তানদের হত্যা করবে না, কারো প্রতি মিথ্যা অপবাদ আরোপ করবে না এবং সৎকাজে নাফরমানী করবে না। তোমাদের মধ্যে যে তা পূর্ণ করবে, তার পুরস্কার আল্লাহর নিকট রয়েছে। আর কেউ এর কোন একটিতে লিপ্ত হলো এবং দুনিয়াতে তার শাস্তি পেয়ে গেলে, তবে তা হবে তার জন্য কাফ্ফারা। আর কেউ এর কোন একটিতে লিপ্ত হয়ে পড়লে এবং আল্লাহ তা অপ্রকাশিত রাখলে, তবে তা আল্লাহর ইচ্ছাধীন। তিনি যদি চান, তাকে মার্জনা করবেন আর যদি চান, তাকে শাস্তি প্রদান করবেন। আমরা এর উপর বায়আত গ্রহণ করলাম।

(৩৮৯২, ৩৮৯৩, ৩৯৯৯, ৪৮৯৪, ৬৭৮৪, ৬৮০১, ৬৮৭৩, ৭০৫৫, ৭১৯৯, ৭২১৩, ৭৪৬৮; মুসলিম ২৯/১০ হাঃ ১৭০৯, আহমাদ ২২৭৪১)

ফিতনা হতে পালায়ন দ্বীনের অংশ.  এ প্রসঙ্গে আবূ সাঈদ খুদরী (রাযি.) হতে  বর্ণিত , আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সেদিন দূরে নয়, যেদিন মুসলিমের উত্তম সম্পদ হবে কয়েকটি বকরী, যা নিয়ে সে পাহাড়ের চূড়ায় অথবা বৃষ্টিপাতের স্থানে চলে যাবে। ফিতনা হতে সে তার ধর্ম সহকারে পলায়ন করবে।

আল্লাহ্‌র প্রতি বিশ্বাস অন্তরের কাজ.এ  প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তাআলা বলেন, ' তিনি তোমাদের অন্তরের সংকল্পের জন্য পাকড়াও করবেন। (সূরাহ্ বাক্বারাহ ২/২২৫)

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন  “আমি তোমাদের তুলনায় আল্লাহ্‌ সম্পর্কে অধিক জ্ঞানী,তোমাদের চেয়ে আমিই আল্লাহকে অধিক ভয় করি ও বেশী জানি। '

কুফরীতে প্রত্যাবর্তন করাকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হবার ন্যায় অপছন্দ করা ঈমানের অন্তর্ভুক্ত।আনাস (রাযি.) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনটি গুণ যার মধ্যে বিদ্যমান, সে ঈমানের স্বাদ পায়- (১) যার নিকট আল্লাহ ও তাঁর রাসূল অন্য সকল বস্তু হতে অধিক প্রিয়; (২) যে একমাত্র আল্লাহরই জন্য কোন বান্দাকে ভালবাসে এবং (৩) আল্লাহ্ তাআলা কুফর হতে মুক্তি প্রদানের পর যে কুফর-এ প্রত্যাবর্তনকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হবার মতোই অপছন্দ করে।

যার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণও ঈমান আছে, তাকেও  জাহান্নাম হতে বের করে আনা হবে.

যারা  তাওবাহ করে, সালাত কায়িম করে এবং যাকাত দেয় তবে তারাও ঈমানদার। এ প্রসংগে ইবনু ‘উমার (রাযি.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ' আমি লোকদের সাথে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার জন্য নির্দেশিত হয়েছি, যতক্ষণ না তারা সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ্ ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল, আর সালাত প্রতিষ্ঠা করে ও যাকাত আদায় করে। তারা যদি এগুলো করে, তবে আমার পক্ষ হতে তাদের জান ও মালের ব্যাপারে নিরাপত্তা লাভ করলো; অবশ্য ইসলামের বিধান অনুযায়ী যদি কোন কারণ থাকে, তাহলে স্বতন্ত্র কথা। আর তাদের হিসাবের ভার আল্লাহর উপর অর্পিত।' (মুসলিম ১/৮ হাঃ ২২)

আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করা হল, ‘কোন্ ‘আমলটি উত্তম?’ তিনি বললেনঃ ‘আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের উপর বিশ্বাস স্থাপন করা।* জিজ্ঞেস করা হলো, ‘অতঃপর কোনটি?’ তিনি বললেনঃ ‘আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। প্রশ্ন করা হল, ‘অতঃপর কোনটি?’

‘‘নিশ্চয়ই ইসলাম আল্লাহর মনোনীত একমাত্র দ্বীন’’- (সূরাহ্ আলেইমরান /১৯) ‘‘আর যে ব্যক্তি ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন দ্বীন অন্বেষণ করবে তবে তা গৃহীত হবে না।’’ (সূরাহ্ আলেইমরান /৮৫)

আম্মার (রাযি.) বলেন, ‘তিনটি গুণ যে আয়ত্ত করে, সে (পূর্ণ) ঈমান লাভ করেঃ () নিজ থেকে ইনসাফ করা, () বিশ্বে সালামের প্রচলন, এবং () অভাবী অবস্থাতেও দান খয়রাত করা।

আবদুল্লাহ্ ইবনুআমর (রাযি.) হতে বর্ণিত। এক ব্যক্তি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করল, ‘ইসলামের কোন্ কাজ সবচেয়ে উত্তম?’ তিনি বললেনঃ তুমি লোকদের খাদ্য খাওয়াবে এবং চেনা অচেনা সকলকে সালাম দিবে।

স্বামীর প্রতি কখনই নাশুকরি করা উচিত নয়। প্রসঙ্গে  ইবনুআব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাকে জাহান্নাম দেখানো হয়। (আমি দেখি), তার অধিবাসীদের বেশির ভাগই নারীজাতি; (কারণ) তারা কুফরী করে। জিজ্ঞেস করা হল, ‘তারা কি আল্লাহর সঙ্গে কুফরী করে?’ তিনি বললেনঃতারা স্বামীর অবাধ্য হয় এবং অকৃতজ্ঞ হয়। তুমি যদি দীর্ঘদিন তাদের কারো প্রতি ইহসান করতে থাক, অতঃপর সে তোমার সামান্য অবহেলা দেখতে পেলেই বলে ফেলে, ‘আমি কক্ষনো তোমার নিকট হতে ভালো ব্যবহার পাইনি। (৪৩১,৭৪৮,১০৫২,৩২০২,৫১৯৭; মুসলিম / হাঃ ৮৮৪, আহমাদ ৩০৬৪)

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 'জেনে রেখো, তোমাদের দাস-দাসী তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ্ তাআলা তাদের তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছেন। তাই যার ভাই তার অধীনে থাকবে, সে যেন তাকে নিজে যা খায় তাকে তা- খাওয়ায় এবং নিজে যা পরিধান করে, তাকেও তা- পরায়। তাদের উপর এমন কাজ চাপিয়ে দিও না, যা তাদের জন্য অধিক কষ্টদায়ক। যদি এমন কষ্টকর কাজ করতে দাও, তাহলে তোমরাও তাদের সে কাজে সহযোগিতা করবে। (২৫৪৫, ৬০৫০; মুসলিম ২৭/১০ হাঃ ১৬৬১, আহমাদ ২১৪৮৮)

মুমিনদের দুদল  দ্বন্ধে  লিপ্ত হলে তোমরা তাঁদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে। (হুজরাত ৪৯/)

নিশ্চয়ই শির্ক হচ্ছে অধিকতর যুলুম’’- (সূরাহ্ লুকমান ৩১/১৩)

আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) থেকে বর্ণনা করেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মুনাফিকের চিহ্ন তিনটিঃ . যখন কথা বলে মিথ্যা বলে; . যখন অঙ্গীকার করে ভঙ্গ করে এবং . আমানত রাখা হলে খিয়ানাত করে। (২৬৮২,২৭৪৯,৬০৯৫; মুসলিম /২৫ হাঃ ৫৯, আহমাদ ৯১৬২)

আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেনঃ যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে নেকির আশায় কদরের রাতে ইবাদতের মধ্যে রাত্রি জাগবে, তার পূর্বের গুনাহ্ ক্ষমা করে দেয়া হবে। (৩৭, ৩৮, ১৯০১, ২০০৮, ২০০৯, ২০১৪; মুসলিম /২৫ হাঃ ৭৬০)

আবূ যুরআহ ইবনুআমর ইবনু জারীর (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি আবূ হুরাইরাহ (রাযি.)-কে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বলতে শুনেছি, তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় বের হয়, যদি সে শুধু আল্লাহর উপর ঈমান এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি ঈমানের কারণে বের হয়ে থাকে, তবে আল্লাহ্ তাআলা ঘোষণা দেন যে, আমি তাকে তার পুণ্য বা গানীমাত ( বাহন) সহ ঘরে ফিরিয়ে আনব কিংবা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাব।   (মুসলিম ৩৩/২৮ হাঃ ১৮৭৬, )

সওয়াবের আকাঙ্খায় রামাদানের সিয়াম পালন ঈমানের অঙ্গ। আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ঈমানসহ পুণ্যের আশায় রমাযানের সিয়াম ব্রত পালন করে, তার পূর্বের গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।

আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয়ই দ্বীন সহজ। দ্বীন নিয়ে যে বাড়াবাড়ি করে দ্বীন তার উপর জয়ী হয়। কাজেই তোমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন কর এবং (মধ্যপন্থার) নিকটে থাক, আশান্বিত থাক এবং সকাল-সন্ধ্যায় রাতের কিছু অংশে (’ইবাদাত সহযোগে) সাহায্য চাও।

আবূ সাঈদ খুদরী (রাযি.) বর্ণনা করেন যে, তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছেন, বান্দা যখন ইসলাম গ্রহণ করে এবং তার ইসলাম উত্তম হয়, আল্লাহ্ তাআলা তার পূর্বের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেন। অতঃপর শুরু হয় প্রতিফল; একটি পুণ্যের বিনিময়ে দশ হতে সাতশ গুণ পর্যন্ত; আর একটি পাপ কাজের বিনিময়ে ঠিক ততটুকু মন্দ প্রতিফল। অবশ্য আল্লাহ্ যদি ক্ষমা করে দেন তবে তা অন্য ব্যাপার।

সুন্দরভাবে ইসলাম গ্রহণের পুরস্কার অনেক। আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ যখন উত্তমরূপে ইসলামের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকে তখন সে যে আমলে সালেহ করে তার প্রত্যেকটির বিনিময়ে সাতশ গুণ পর্যন্ত (পুণ্য) লেখা হয়। আর সে যে পাপ কাজ করে তার প্রত্যেকটির বিনিময়ে তার জন্য ঠিক ততটুকুই পাপ লেখা হয়। (মুসলিম /৫৯ হাঃ ১২৯, আহমাদ ৮২২৪)

আল্লাহ্ তাআলার কাছে সবচেয়ে অধিক পছন্দনীয় আমল সেটাই যা নিয়মিত করা হয়

আনাস (রাযি.) থেকে বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যেলা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে আর তার অন্তরে একটি যব পরিমাণও পুণ্য বিদ্যমান থাকবে, তাকে জাহান্নাম হতে বের করা হবে এবং যেলা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ বলবে আর তার অন্তরে একটি গম পরিমাণও পুণ্য বিদ্যমান থাকবে তাকে জাহান্নাম হতে বের করা হবে এবং যেলা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ বলবে আর তার অন্তরে একটি অণু পরিমাণও নেকী থাকবে তাকে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে।

যাকাত ইসলামের অঙ্গ। আল্লাহ্ তাআলার বাণীঃ ’’তারা তো আদিষ্ট হয়েছিল আল্লাহর আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তাঁরই ইবাদত করতে এবং সালাত প্রতিষ্ঠা করতে, যাকাত আদায় করতে। আর এটি- সঠিক দ্বীন।’’ (সূরাহ্ বাইয়িনাহ্ ৯৮/)

জানাযাহ্র  পিছে পিছে যাওয়া ঈমানের অন্তর্ভুক্ত।

 নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলিমকে গালি দেয়া ফাসিকী এবং তার সাথে লড়াই করা কুফরী। (৬০৪৪,৭০৭৬; মুসলিম /২৮, হাঃ ৬৪, আহমাদ ৩৬৪৭)

আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনসমক্ষে উপবিষ্ট ছিলেন, এমন সময় তাঁর নিকট জনৈক ব্যক্তি এসে জিজ্ঞেস করলেনঈমান কী?’ তিনি বললেনঃঈমান হল, আপনি বিশ্বাস রাখবেন আল্লাহর প্রতি, তাঁর মালিকগণের প্রতি, (কিয়ামতের দিন) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের প্রতি এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি। আপনি আরো বিশ্বাস রাখবেন পুনরুত্থানের প্রতি।

 তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইসলাম কী?’ তিনি বললেনঃইসলাম হল, আপনি আল্লাহর ইবাদত করবেন এবং তাঁর সাথে অংশীদার স্থাপন করবেন না, সালাত প্রতিষ্ঠা করবেন, ফরজ যাকাত আদায় করবেন এবং রমাযান-এর সিয়ামব্রত পালন করবেন।

ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইহসান কী?’ তিনি বললেনঃআপনি এমনভাবে আল্লাহরইবাদাত করবেন যেন আপনি তাঁকে দেখছেন, আর যদি আপনি তাঁকে দেখতে না পান তবে (মনে করবেন) তিনি আপনাকে দেখছেন।

ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলেন, ‘কিয়ামত কবে?’ তিনি বললেনঃ ব্যাপারে যাকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে, তিনি জিজ্ঞেসকারী অপেক্ষা অধিক জ্ঞাত নন। তবে আমি আপনাকে কিয়ামতের আলামতসমূহ বলে দিচ্ছিঃ বাঁদী যখন তার প্রভুকে প্রসব করবে এবং উটের নগণ্য রাখালেরা যখন বড় বড় অট্টালিকা নির্মাণে প্রতিযোগিতা

(কিয়ামতের জ্ঞান) সেই পাঁচটি জিনিসের অন্তর্ভুক্ত, যা আল্লাহ্ ব্যতীত কেউ জানে না।কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহরই নিকট...... (সূরাহ্ লুক্বমান ৩১/৩৪)

এরপর ব্যক্তি চলে গেলে তিনি বললেনঃতোমরা তাকে ফিরিয়ে আন। তারা কিছুই দেখতে পেল না। তখন তিনি বললেন, ‘ইনি জিবরীল () লোকদেরকে তাদের দ্বীন শেখাতে এসেছিলেন।

এটি একটি মহাহাদীস, এর মধ্যে সন্নিবেশিত হয়েছে প্রকৃত ইসলাম ধর্মের সমস্ত প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য মৌলিক বিষয়সমূহ।

সুতরাং ঈমান ছাড়া আমল এবং আমল ছাড়া ঈমান গ্রহণযোগ্য নয় এবং সঠিক পন্থাও নয়। কেননা প্রকৃত ইসলাম হলো ঈমান আমলের সমষ্টি। তাই পবিত্র কুরআন এবং নির্ভরযোগ্য হাদীসের আলোকে আমল বা সৎকর্ম সম্পাদন প্রকৃত ইসলাম ধর্মের অন্তর্ভুক্ত। কেননা আমল বা সৎকর্ম সম্পাদন করা অন্তরের প্রকৃত ঈমানের ফলাফল।

প্রকৃত ঈমানের সাথে জড়িত রয়েছে প্রকৃত ইসলাম ধর্মের শিক্ষা মোতাবেক কথা, কর্ম এবং নিয়ত। অতএব অন্তরে ঈমান স্থাপন করার অর্থ হল: আল্লাহর প্রতি অন্তরে অটল বিশ্বাস স্থাপন করা, এই বিশ্বাসের মৌখিক স্বীকৃতি প্রদান করা এবং এই বিশ্বাস অনুযায়ী কর্ম সম্পাদনের মাধ্যমে নিজেকে পরিচালিত করা।

প্রকৃত ঈমান এরূপই, ঈমানের স্বাদ অন্তরের সাথে মিশে গেলে কেউ তা অপছন্দ করে না।

আরো জেনে রাখ যে, আল্লাহর যমীনে তাঁর সংরক্ষিত এলাকা হলো তাঁর নিষিদ্ধ কাজসমূহ। জেনে রাখ, শরীরের মধ্যে একটি মাংসের টুকরো আছে, তা যখন ঠিক হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখন ঠিক হয়ে যায়। আর তা যখন খারাপ হয়ে যায়, গোটা শরীরই তখন খারাপ হয়ে যায়। জেনে রাখ, সে মাংসের টুকরোটি হল অন্তর। (২০৫১; মুসলিম ২২/২০ হাঃ ১৫৯৯, আহমাদ ১৮৩৯৬, ১৮৪০২)

আমলসমূহ সংকল্প পুন্যের আকাঙ্খা অনুযায়ী, প্রতিটি ব্যক্তির প্রাপ্য তাঁর সংকল্প অনুযায়ী।

আবূ মাসঊদ (রাযি.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষ স্বীয় পরিবার-পরিজনের জন্য পুণ্যের আশায় যখন ব্যয় করে তখন সেটা তার জন্য সাদাকা হয়ে যায়।

সাআদ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃতুমি আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশে যা- ব্যয় কর না কেন, তোমাকে তার প্রতিদান নিশ্চিতরূপে প্রদান করা হবে। এমনকি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যা তুলে দাও, তারও।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর বাণীঃদ্বীন হলো কল্যাণ কামনা করা আল্লাহ্ সন্তুষ্টির জন্য, তাঁর রসূলের জন্য, মুসলিম নেতৃবৃন্দের জন্য এবং সমগ্র মুসলিমের জন্য

প্রিয় ভাই-বোন  বন্ধু -বান্ধব গণ, মন প্রাণ দিয়ে আল্লাহকে ভালোবেসে দেখো, আল্লাহ তোমায় কত ভালোবাসে।  যখন একজন মানুষ আল্লাহ কে চিনতে পারে , তখন সে সত্যিকারের ঈমানের স্বাদ উপলব্ধি করতে পারে। তাই প্রিয় ভাই-বোন  বন্ধু -বান্ধব গণ এসো সত্যিকার ঈমানদার হই  এবং আমাদের অতি প্রিয় আল্লাহকে চিনতে  বুঝতে পারি।

আল্লাহর সৃষ্টি যদি  হয় এত সুন্দর, তাহলে  না জানি - আমার আল্লাহ কত সুন্দর। 

 

খন্দকার  নাজনীন সুলতানা

লেখক সাংবাদিক

১৫-০৯-২০২৩


No comments:

Post a Comment