আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রক্তস্রাব বা হায়য সম্পর্কে
বলেছেন,' এ তো আল্লাহ্তা‘আলাই আদম-কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। '
আর
আল্লাহর বাণীঃ ‘‘তারা আপনার কাছে জিজ্ঞেস করে রক্তস্রাব সম্বন্ধে। আপনি বলুনঃ তা অশুচি। কাজেই
রক্তস্রাব অবস্থায় তোমরা স্ত্রীগমন থেকে বিরত থাকবে এবং পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত
তাদের নিকটবর্তী হবে না। সুতরাং যখন তারা উত্তমরূপে পরিশুদ্ধ হবে তখন তোমরা তাদের কাছে ঠিক সেভাবে গমন করবে যেভাবে আল্লাহ্ তোমাদের আদেশ দিয়েছেন। আল্লাহ তওবাকারীদের ভালবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরও ভালবাসেন।’’
(সূরাহ্ আল-বাক্বারাহ্ ২/২২২)
রওয়াহ
(রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ তাঁকে (‘উরওয়াহ্কে) প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, ঋতুবতী স্ত্রী কি স্বামীর খিদমত
করতে পারে? অথবা গোসল ফরয হওয়ার অবস্থায় কি স্ত্রী স্বামীর
নিকটবর্তী হতে পারে? ‘উরওয়াহ (রহঃ) জবাব দিলেন, এ সবই আমার
নিকট সহজ। এ ধরনের সকল
মহিলাই স্বামীর খিদমত করতে পারে। এ ব্যাপারে কারো
অসুবিধা থাকার কথা নয়। আমাকে ‘আয়িশা (রাঃ) বলেছেন যে, তিনি হায়েযের অবস্থায় আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চুল আঁচড়ে
দিতেন। আর আল্লাহ্র
রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মু’তাফিক অবস্থায় মসজিদ হতে তাঁর (‘আয়িশার) হুজরার দিকে তাঁর নিকট মাথাটা বাড়িয়ে দিতেন। তখন তিনি মাথার চুল আঁচড়াতেন অথচ তিনি ছিলেন ঋতুবতী।
উম্মু
সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে একই
চাদরের নীচে শুয়ে ছিলাম। হঠাৎ আমার হায়েয দেখা দিলে আমি চুপি চুপি বেরিয়ে গিয়ে হায়েযের কাপড় পরে নিলাম। তিনি বললেনঃ তোমার কি নিফাস দেখা
দিয়েছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তখন তিনি আমাকে ডাকলেন। আমি তাঁর সঙ্গে চাদরের ভেতর শুয়ে পড়লাম। (মুসলিম ৩/২, হাঃ
২৯৬, আহমাদ ২৬৫৮৭)
আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আমি ও নবী (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জানাবাত অবস্থায় একই পাত্র হতে পানি নিয়ে গোসল করতাম।
‘আত্বা
(রহ.) জাবির (রাযি.) হতে বর্ণনা করেন যে, ‘আয়িশাহ (রাযি.) হায়য অবস্থায় কা‘বা ত্বওয়াফ ছাড়াহাজ্জের অন্যান্য আহকাম পালন করেছেন কিন্তু সালাত আদায় করেননি।
আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আমরা আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে হজ্জের
উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিলাম। আমরা ‘সারিফ’
নামক স্থানে পৌঁছেলে আমি ঋতুবতী হই। এ সময় নবী
(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসে আমাকে কাঁদতে দেখলেন এবং জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কাঁদছ কেন? আমি বললামঃ আল্লাহ্র শপথ! এ
বছর হজ্জ না করাই আমার
জন্য পছন্দনীয়। তিনি বললেনঃ সম্ভবত তুমি ঋতুবতী হয়েছ। আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ এটাতো আদম-কন্যাদের জন্যে আল্লাহ্ নির্ধারিত করেছেন। তুমি পবিত্র হওয়া পর্যন্ত অন্যান্য হাজীদের মত সমস্ত কাজ
করে যাও, কেবল কা’বার তাওয়াফ করবে না।
আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ ফাতিমা বিনতু আবূ হুবায়শ (রাঃ) আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলেনঃ
হে আল্লাহ্র রাসূল! আমি
কখনও পবিত্র হই না। এমতাবস্থায়
আমি কি সালাত ছেড়ে
দেব? আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ হলো এক
ধরনের বিশেষ রক্ত, হায়েযের রক্ত নয়। যখন তোমার হায়েয শুরু হয় তখন তুমি সালাত ছেড়ে দাও। আর হায়েয শেষ
হলে রক্ত ধুয়ে সালাত আদায় কর।
উম্মু
আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ কোন মৃত ব্যক্তির জন্যে আমাদের তিন দিনের অধিক শোক পালন করা হতে নিষেধ করা হতো। কিন্তু স্বামীর ক্ষেত্রে চার মাস দশদিন (শোক পালনের ছিল)। আমরা তখন
সুরমা লাগাতাম না, সুগন্ধি ব্যবহার করতাম না.
‘আয়িশাহ
(রাযি.) বলতেনঃ তাড়াহুড়া করো না, তুলা সাদা
পরিষ্কার দেখা পর্যন্ত অপেক্ষা কর। এ দ্বারা তিনি
হায়য হতে পাক হওয়া বোঝাতেন।
আয়িশা
(রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ আল্লাহ্র রাসূল (সাল্লাল্লাহু
’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ হায়েয দেখা দিলে সালাত ছেড়ে দাও আর হায়েযের সময়
শেষ হয়ে গেলে রক্ত ধুয়ে নাও এবং সালাত আদায় কর।
সামুরাহ
ইব্নু জুনদুব (রাঃ)
থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ একজন প্রসূতি মহিলা মারা গেলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার জানাযার সালাত আদায় করলেন। সালাতে তিনি মহিলার দেহের মাঝ বরাবর দাঁড়িয়েছিলেন।
Khandaker Nazneen Sultana ,
Writer, Journalist.
No comments:
Post a Comment