Wednesday 20 September 2023

পবিত্রতা ব্যতীত সালাত কবূল হবে না।

 পবিত্রতা ব্যতীত সালাত কবূল হবে না। সেই পবিত্রতা অর্জিত হয় ওযু এবং গোসলের দ্বারা। কখনো ওজু করলেই হয় , কখনো আবার গোসল ফরজ হয়ে যায়।

আল্লাহ তাআলার বাণীঃ ’’তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার আল্লাহ তাআলা তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেবেন এবং তাদেরকেও (বাড়িয়ে দিবেন) যাদেরকে ইলম দেয়া হয়েছে। আর আল্লাহ তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে পূর্ণ অবগত আছেন’’- (সূরাহ্ আল-মুজাদালাহ্ ৫৮/১১)

 ’’হে আমার প্রতিপালক! আমার জ্ঞান বাড়িয়ে দাও।’’ (সূরাহ্ তোয়াহা ২০/১১৪)

 আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মজলিসে জনসম্মুখে বললেন, যখন আমানত নষ্ট করা হয় তখন কিয়ামতের প্রতীক্ষা করবে।  যখন কোন অনুপযুক্ত ব্যক্তির উপর কোন কাজের দায়িত্ব দেয়া হয়, তখন তুমি কিয়ামতের অপেক্ষা করবে।

আল্লাহ তাআলার বাণীঃ (ওহে যারা ঈমান এনেছ!) তোমরা যখন সালাতের জন্য দাঁড়াতে চাও তখন ধৌত করে নিবে নিজেদের মুখমন্ডল এবং হাত কনুই পর্যন্ত আর মাসেহ করে নিবে নিজেদের মস্তক এবং ধৌত করে নিবে নিজেদের পা গ্রন্থি পর্যন্ত। (সূরাহ্ আল-মায়িদাহ্ /)

আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃযে ব্যক্তির হাদাস হয় তার সালাত কবূল হবে না, যতক্ষণ না সে উযূ করে। হাযরা-মাওতের জনৈক ব্যক্তি বলল, ’হে আবূ হুরাইরাহ! হাদাস কী?’ হাদাস কী?’ তিনি বললেন, ’নিঃশব্দে বা সশব্দে বায়ু বের হওয়া। (৬৯৫৪; মুসলিম /, হাঃ ২২৫, আহমাদ ৮০৮৪)

 আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত,  আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -বলেছেন , কিয়ামতের দিন আমার উম্মাতকে এমন অবস্থায় আহবান করা হবে যে, উযূর প্রভাবে তাদের হাত-পা মুখমন্ডল উজ্জ্বল থাকবে। তাই তোমাদের মধ্যে যে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে নিতে পারে, সে যেন তা করে। (মুসলিম /১২, হাঃ ২৪৬, আহমাদ ৯২০৬)

 আনাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন প্রকৃতির ডাকে শৌচাগারে যেতেন তখন বলতেন,  “আল্লাহুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিনাল খুবুছি ওয়াল খাবায়িছ ’’হে আল্লাহ্! আমি মন্দ কাজ শয়তান থেকে আপনার আশ্রয় চাচ্ছি।’’

সর্বাবস্থায় বিসমিল্লাহ্বলা উচিৎ , এমনকি সহবাসের সময়েও

ইবনুআব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ তার স্ত্রীর সাথে মিলনের পূর্বে যদি বলে, আল্লাহর নামে আরম্ভ করছি। আল্লাহ্! তুমি আমাদেরকে শয়তান থেকে দূরে রাখ এবং যা আমাদেরকে দান করবে তাকেও শয়তান থেকে দূরে রাখ)- অতঃপর ( মিলনের দ্বারা) তাদের কিসমতে কোন সন্তান থাকলে শয়তান তার কোন ক্ষতি করতে পারবে না

আবূ আইয়ুব আনসারী (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেনঃ' তোমাদের কেউ যখন শৌচাগারে যায়, তখন সে যেন কিবলার দিকে মুখ না করে এবং তার দিকে পিঠও না করে, বরং তোমরা পূর্ব দিক এবং পশ্চিম দিকে ফিরে বসবে।'

আবূ ক্বাতাদাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখন পান করে, তখন সে যেন পাত্রের মধ্যে নিঃশ্বাস না ছাড়ে। আর যখন শৌচাগারে যায় তখন তার পুরুষাঙ্গ যেন ডান হাত দিয়ে স্পর্শ না করে এবং ডান হাত দিয়ে যেন শৌচকার্য না করে। (১৫৪, ৫৬৩০; মুসলিম /১৮, হাঃ ২৬৭, আহমাদ ২২৬২৮)

 আবূ হুরাইরাহ (রাযি.)হতে বর্ণিত , নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি উযূ করে সে যেন নাকে পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করে। আর যে শৌচকার্য করে সে যেন বিজোড় সংখ্যক ঢিলা ব্যবহার করে। (১৬২; মুসলিম /, হাঃ ২৩৭,

আল্লাহর নাবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেন: "তোমাদের মধ্যে থেকে যখন কোনো ব্যক্তি যত্নসহকারে সম্পূর্ণরূপে অথবা উত্তম রূপে ওজু করবে এবং বলবে: (অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো সত্য উপাস্য নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, অব্যশই মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আল্লাহর অতি প্রিয় মানুষ দূত।)তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হবে, সে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছে করবে, সেই দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে(সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৭২২৪ )

প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির  অপরিহার্য নিয়ম  হলো এই যে, তারা যেন প্রকৃত ইসলাম ধর্মের কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সঠিক পন্থায় অনুসরণ করে।

প্রকৃত ইসলাম ধর্মের একটি স্থায়ী বিধান হলো এই যে, সম্মানিত সমাদৃত কাজে অথবা যে বিষয়টির দ্বারা সম্মান মর্যাদা প্রদান করা হয়: যেমন জামাকাপড়, পাজামা, মোজা পরিধান করা। এবং মাসজিদে প্রবেশ, মেসওয়াক বা দাঁতন ব্যবহার করা, চোখে কাজল বা সুরমা লাগানো, নখ কাটা, মোচ ছাঁটা, চিরনির দ্বারা মাথার চুল আঁচড়াবার সময়, বগলের চুল উপড়ানো বা তুলে ফেলার সময়, মাথার চুল মুণ্ডন এবং নামাজ শেষে সালাম ফেরানো, পবিত্রতার্জন করার সময়, দেহের অঙ্গগুলি ধৌত করার সময় ডান দিক থেকে শুরু করা উত্তম। অনুরূপভাবে শৌচাগার বা টয়লেট থেকে বের হওয়ার সময়, পানাহার মুসাফাহা করার সময় এবং  হাজরে আসওয়াদস্পর্শ করার সময় এবং আরো ইত্যাদি সেই সমস্ত কাজে ডান হাত কিংবা  দিক থেকে আরম্ভ করা উত্তম বা মুস্তাহাব যে সমস্ত কাজে সম্মান মর্যাদাদান করা হয়

 যে সমস্ত কাজে সম্মান মর্যাদা দান করা হয় না যেমন, শৌচাগার বা টয়লেটে প্রবেশ করা, মাসজিদথেকে বের হওয়ানাক পরিষ্কার করা, মলত্যাগের পর মলদ্বার ইত্যাদি পরিষ্কার করা, জামাকাপড়, পাজামা, মোজা ইত্যাদি খোলার কাজগুলি বাম দিক থেকে সম্পাদন করা উত্তম বা মুস্তাহাব।

আর এই বিধানটির উদ্দেশ্য হলো ডান দিকের সম্মান মর্যাদা দান করা।

উম্মু আতিয়্যাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর মেয়ে [যায়নাব (রাযি.)]-কে গোসল করানোর সময় তাঁদের বলেছিলেনঃ তোমরা তার ডান দিক হতে এবং উযূর অঙ্গ হতে আরম্ভ কর। (১২৫৩ হতে ১২৬৩ পর্যন্ত)

আয়িশাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুতা পরা, চুল আঁচড়ানো এবং পবিত্রতা অর্জন করা তথা প্রত্যেক কাজই ডান দিক হতে আরম্ভ করতে পছন্দ করতেন। (৪২৬, ৫৩৮০, ৫৮৫৪, ৫৯২৬; মুসলিম ১৫/, হাঃ ১১৮৭)

আয়িশাহ (রাযি.) বলেনঃ একবার ফজরের সময় হল, তখন পানি অনুসন্ধান করা হল; কিন্তু কোথাও পাওয়া গেল না। তখন তায়াম্মুম (এর আয়াত) অবতীর্ণ হল।

 আনাস ইবনু মালিক (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে দেখলাম, তখন আসরের সালাতের সময় হয়ে গিয়েছিল। আর লোকজন উযূর পানি খুঁজতে লাগল কিন্তু পেল না। তারপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট কিছু পানি আনা হল। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে পাত্রে তাঁর হাত রাখলেন এবং লোকজনকে তা থেকে উযূ করতে বললেন। আনাস (রাযি.) বলেন, সে সময় আমি দেখলাম, তাঁর আঙ্গুলের নীচ থেকে পানি উপচে পড়ছে। এমনকি তাদের শেষ ব্যক্তি পর্যন্ত তার দ্বারা উযূ করল। (মুসলিম ৪৩/, হাঃ ২২৭৯, আহমাদ ১২৪৯৯)

 

আনাস ইবনু মালিক (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে দেখলাম, তখন আসরের সালাতের সময় হয়ে গিয়েছিল। আর লোকজন উযূর পানি খুঁজতে লাগল কিন্তু পেল না। তারপর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট কিছু পানি আনা হল। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে পাত্রে তাঁর হাত রাখলেন এবং লোকজনকে তা থেকে উযূ করতে বললেন। আনাস (রাযি.) বলেন, সে সময় আমি দেখলাম, তাঁর আঙ্গুলের নীচ থেকে পানি উপচে পড়ছে। এমনকি তাদের শেষ ব্যক্তি পর্যন্ত তার দ্বারা উযূ করল। (মুসলিম ৪৩/, হাঃ ২২৭৯, আহমাদ ১২৪৯৯)

আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন তোমাদের কারো পাত্রে যদি কুকুর পান করে তবে তা যেন সাতবার ধুয়ে নেয়। (মুসলিম /২৭, হাঃ ২৭৯, আহমাদ ৭৩৫০,)

আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ (পূর্ব যুগে) জনৈক ব্যক্তি একটি কুকুরকে তৃষ্ণার্ত অবস্থায় ভিজা মাটি চাটতে দেখতে পেয়ে তার মোজা নিল এবং কুকুরটির জন্য কুয়া হতে পানি এনে দিতে লাগল যতক্ষণ না সে ওর তৃষ্ণা মিটাল। আল্লাহ্ এর বিনিময় দিলেন এবং তাকে জান্নাতে প্রবেশ করালেন।

আত্বা (রহ.) বলেন, যার পেছনের রাস্তা দিয়ে পোকা বের হয় অথবা যার পুরুষাঙ্গ দিয়ে উকুনের ন্যায় কিছু বের হয়, তার পুনরায় উযূ করতে হবে।

আব্বাস ইবনু তামীম (রহ.), তাঁর চাচার সূত্রে বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (কোন মুসল্লী) সালাত থেকে সরে থাকবে না যতক্ষণ না সে শব্দ শুনতে পায় কিংবা গন্ধ পায়। (১৩৭)

আর তোমাদের মাথা মাসেহ কর’’ (সূরাহ্ আল-মায়িদাহ্ /)

আমর ইবনু আবূ হাসান (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনিআবদুল্লাহ্ ইবনু যায়দ (রাযি.)-কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর উযূ সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি এক পাত্র পানি আনলেন এবং তাঁদের (দেখাবার) জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর মত উযূ করলেন। তিনি পাত্র থেকে দুহাতে পানি ঢাললেন। তা দিয়ে হাত দুটি তিনবার ধুলেন। অতঃপর পাত্রের মধ্যে হাত ঢুকিয়ে তিন খাবল পানি নিয়ে কুলি করলেন এবং নাকে পানি দিয়ে নাক ঝাড়লেন। তারপর আবার হাত ঢুকালেন। তিনবার তাঁর মুখমন্ডল ধুলেন। তারপর আবার হাত ঢুকিয়ে (পানি নিয়ে) দুই হাত কনুই পর্যন্ত দুবার ধুলেন। তারপর আবার হাত ঢুকিয়ে উভয় হাত দিয়ে সামনে এবং পেছনে একবার মাত্র মাথা মাসেহ করলেন। তারপর দু পা টাখনু পর্যন্ত ধুলেন।

ওযূর ফরয বা আবশ্যক বিষয়গুলো ছাড়াও বেশ কিছু সুন্নাত বা মুস্তাহাব বিষয়ের প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে অত্র হাদীসে। আমরা সেগুলোকে ওযূর সুন্নাত বলতে পারি। বিভিন্ন হাদীস থেকে ওযূর নিম্নলিখিত সুন্নাতসমূহ সাব্যস্ত হচ্ছে- () মিসওয়াক করা। () হাত কব্জি পর্যন্ত তিনবার ধৌত করা। () কুলি নাকে পানি দেয়া। () ঘন দাড়ি হাত-পায়ের আঙ্গুল খিলাল করা। () ডান দিক থেকে শুরু করা। () দ্বিতীয় তৃতীয়বার ধৌত করা। () কান ধোয়ার জন্য নতুন পানি গ্রহণ করা। () ওযূর পরে দো' পড়া। () ওযূর পরে দু' রাক'আত সালাত আদায় করা।

আনাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একপাত্র পানি চাইলে একটি বড় পাত্রতাঁর নিকট আনা হল, তাতে সামান্য পানি ছিল। তারপর তিনি তার মধ্যে তাঁর আঙ্গুল রাখলেন। আনাস (রাযি.) বলেনঃ আমি পানির দিকে তাকাতে লাগলাম। তাঁর আঙ্গুলের ভেতর দিয়ে পানি উপচে পড়তে লাগল। আনাস (রাযি.) বলেনঃ যারা উযূ করেছিল, আমি অনুমান করলাম তাদের সংখ্যা ছিল সত্তর হতে আশি জনের মত।

ক্ষেত্র বিশেষে মোজার উপর মাসেহ করাজায়েজ আছে।

 উমাইয়াহ যামরী (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে উভয় মোজার উপর মাসেহ করতে দেখেছেন। হার্ব আবান (রহ.) ইয়াহ্ইয়া (রহ.) হতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

আয়িশাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সালাতরত অবস্থায় তোমাদের কেউ তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়লে সে যেন ঘুমের আমেজ চলে না যাওয়া পর্যন্ত ঘুমিয়ে নেয়। কারণ, যে তন্দ্রাবস্থায় সালাত আদায় করে সে জানে না যে, সে কি ইস্তেগফার করছে নাকি নিজেকে গালি দিচ্ছে।(মুসলিম /৩১, হাঃ ৭৮৬, আহমাদ ২৪৩৪১,)

চোগলখুরী বা একের কথা অন্যের কাছে লাগানো হারাম কবীরা গুনাহ। এর মাধ্যমে স্বার্থ হাসিল করা আরো বড় হারাম।

 চোগলখুরী পেশাব থেকে পবিত্র না হওয়া কবর আযাবের অন্যতম কারণ।

ইবনুআব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা মাদ্বীনা বা মক্কার বাগানগুলোর মধ্য হতে কোন এক বাগানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি এমন দু ব্যক্তির আওয়ায শুনতে পেলেন যে, তাদেরকে কবরে আযাব দেয়া হচ্ছিল। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এদের দুজনকে আযাব দেয়া হচ্ছে, অথচ কোন গুরুতর অপরাধে তাদের শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। তারপর তিনি বললেনঃহ্যাঁ, এদের একজন তার পেশাব করতে গিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করত না। অপর ব্যক্তি চোগলখোরী করত। অতঃপর তিনি একটি খেজুরের ডাল আনতে বললেন, এবং তা ভেঙ্গে দু টুকরা করে প্রত্যেকের কবরের উপর এক টুকরা করে রাখলেন। তাঁকে বলা হল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! কেন এমন করলেন?’ তিনি বললেনঃ আশা করা যেতে পারে যতক্ষণ পর্যন্ত দুটি শুকিয়ে না যায় তাদের আযাব কিছুটা হালকা করা হবে। (মুসলিম /৩৪, হাঃ ২৯২)

আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেনঃ আল্লাহররাস্তায় মুসলিমদের যে যখম হয়, কিয়ামতের দিন তার প্রতিটি যখম আঘাতকালীন সময়ে যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থাতেই থাকবে। রক্ত ছুটে বের হতে থাকবে। তার রং হবে রক্তের রং কিন্তু গন্ধ হবে মিশকের মত। (মুসলিম ৩৩/২৮, হাঃ ১৮৭৬, আহমাদ ৯১৯৮)

আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছেন যে, আমরা শেষে আগমনকারী এবং (ক্বিয়ামাত (কিয়ামত) দিবসে) অগ্রবর্তী।

সনদেই তিনি বলেনঃ তোমাদের কেউ যেন স্থির- যা প্রবাহিত নয় এমন পানিতে কখনো পেশাব না করে। (সম্ভবত) পরে সে আবার তাতে গোসল করবে।

আয়িশাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে সকল পানীয় নেশা সৃষ্টি করে, তা হারাম।

হুযায়ফাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রাতে (সালাতের জন্য) উঠতেন তখন মিসওয়াক দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতেন। (৮৮৯, ১১৩৬; মুসলিম /১৫, হাঃ ২৫৫)

আমাদের সবার উচিত নাপাকি অবস্থা থেকে গোসল ওযু করে পাক পবিত্র হয়ে তবেই এবাদতের উদ্দেশে সালাতে দাঁড়ানো। 

আল্লাহ আমাদের সবাইকে কোরআন হাদিসে বর্ণিত সকল নিয়মাবলী জানার মানার তৈফিক দেন করুন।  আমিন।

Khandaker Nazneen Sultana,

Writer and Journalist.











 

 

 

No comments:

Post a Comment