Sunday 8 October 2023

নিঃসন্দেহে তোমরাও আল্লাহকে দেখতে পাবে


আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, সাহাবীগণ নবী সাল্লাল্লাহু


আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞেস 
করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি কিয়ামতের দিন আমাদের রবকে দেখতে পাব? তিনি বললেনঃ মেঘমুক্ত পুর্ণিমার রাতের চাঁদকে দেখার ব্যাপারে তোমরা কি সন্দেহ পোষণ কর? তাঁরা বললেন, না, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখার ব্যাপারে কি তোমাদের কোন সন্দেহ আছে? সবাই বললেন, না। তখন তিনি বললেনঃ নিঃসন্দেহে তোমরাও আল্লাহকে তেমনিভাবে দেখতে পাবে।

কিয়ামতের দিন সকল মানুষকে সমবেত করা হবে। অতঃপর আল্লাহ্ তা‘আলা বলবেন, যে যার উপাসনা করতে সে যেন তার অনুসরণ করে। তাই তাদের কেউ সূর্যের অনুসরণ করবে, কেউ চন্দ্রের অনুসরণ করবে, কেউ তাগুতের অনুসরণ করবে। আর বাকী থাকবে শুধুমাত্র উম্মাহ্, তবে তাদের সাথে মুনাফিকরাও থাকবে। তাঁদের মাঝে এ সময় আল্লাহ তা‘আলা আগমন করবেন এবং বলবেনঃ ‘‘আমি তোমাদের রব।’’ তখন তারা বলবে, যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের রবের আগমন না হবে, ততক্ষণ আমরা এখানেই থাকব। আর তার যখন আগমন হবে তখন আমরা অবশ্যই তাঁকে চিনতে পারব। তখন তাদের মাঝে মহান পরাক্রমশালী আল্লাহ্ তা‘আলা আগমন করবেন এবং বলবেন, ‘‘আমি তোমাদের রব।’’ তারা বলবে, হাঁ, আপনিই আমাদের রব। আল্লাহ্ তা‘আলা তাদের ডাকবেন। আর জাহান্নামের উপর একটি সেতু স্থাপন করা হবে। রাসূলগণের মধ্যে আমিই সবার আগে আমার উম্মাত নিয়ে এ পথ অতিক্রম করব। সেদিন রাসূলগণ ব্যতীত আর কেউ কথা বলবে না। আর রাসূলগণের কথা হবেঃ (আল্লাহুম্মা সাল্লিম সাল্লিম) হে আল্লাহ্! রক্ষা করুন, রক্ষা করুন।

 

আর জাহান্নামে বাঁকা লোহার বহু শলাকা থাকবে; সেগুলো হবে সা‘দান কাঁটার মতো। তোমরা কি সা‘দান কাঁটা দেখেছ? তারা বলবে, হাঁ, দেখেছি। তিনি বলবেন, সেগুলো দেখতে সা‘দান* কাঁটার মতোই। তবে সেগুলো কত বড় হবে তা একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া আর কেউ জানে না। সে কাঁটা লোকের ‘আমল অনুযায়ী তাদের তড়িৎ গতিতে ধরবে। তাদের কিছু লোক ধ্বংস হবে ‘আমলের কারণে। আর কারোর পায়ে যখম হবে, কিছু লোক কাঁটায় আক্রান্ত হবে, অতঃপর নাজাত পেয়ে যাবে। জাহান্নামীদের হতে যাদের প্রতি আল্লাহ্ তা‘আলা রহমত করতে ইচ্ছা করবেন, তাদের ব্যাপারে মালাইকাহ্কে নির্দেশ দেবেন যে, যারা আল্লাহর ‘ইবাদাত করতো, তাদের যেন জাহান্নাম হতে বের করে আনা হয়। মালাইকাহ তাদের বের করে আনবেন এবং সিজদার চিহ্ন দেখে তাঁরা তাদের চিনতে পারবেন। কেননা, আল্লাহ্ তা‘আলা জাহান্নামের জন্য সিজদার চিহ্নগুলো মিটিয়ে দেয়া হারাম করে দিয়েছেন। ফলে তাদের জাহান্নাম হতে বের করে আনা হবে। কাজেই সিজদার চিহ্ন ছাড়া আগুন বানী আদমের সব কিছুই গ্রাস করে ফেলবে। অবশেষে, তাদেরকে অঙ্গারে পরিণত অবস্থায় জাহান্নাম হতে বের করা হবে। তাদের উপর ‘আবে-হায়াত’ ঢেলে দেয়া হবে ফলে তারা স্রোতে বাহিত ফেনার উপর গজিয়ে উঠা উদ্ভিদের মত সঞ্জীবিত হয়ে উঠবে। অতঃপর আল্লাহ্ তা‘আলা বান্দাদের বিচার কাজ সমাপ্ত করবেন কিন্তু একজন লোক জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝখানে থেকে যাবে। তার মুখমন্ডল তখনও জাহান্নামের দিকে ফেরানো থাকবে। জাহান্নামবাসীদের মধ্যে জান্নাতে প্রবেশকারী সেই শেষ ব্যক্তি।

 

সে তখন নিবেদন করবে, হে আমার রব! জাহান্নাম হতে আমার চেহারা ফিরিয়ে দিন। এর দূষিত হাওয়া আমাকে বিষিয়ে তুলছে, এর লেলিহান শিখা আমাকে যন্ত্রণা দিচ্ছে। তখন আল্লাহ্ তা‘আলা বলবেন, তোমার নিবেদন গ্রহণ করা হলে, তুমি এছাড়া আর কিছু চাইবে না তো? সে বলবে, না, আপনার ইয্যতের শপথ! সে তার ইচ্ছামত আল্লাহ্ তা‘আলাকে অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি দিবে। কাজেই আল্লাহ তা‘আলা তার চেহারাকে জাহান্নামের দিক হতে ফিরিয়ে দিবেন। অতঃপর সে যখন জান্নাতের দিকে মুখ ফিরাবে, তখন সে জান্নাতের অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে পাবে। যতক্ষণ আল্লাহর ইচ্ছা সে চুপ করে থাকবে।

 

অতঃপর সে বলবে, হে আমার রব! আপনি জান্নাতের দরজার নিকট পৌঁছে দিন। তখন আল্লাহ তা‘আলা তাকে বলবেন, তুমি পূর্বে যা চেয়েছিলে, তা ছাড়া আর কিছু চাইবে না বলে তুমি কি অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি দাওনি? তখন সে বলবে, হে আমার রব! তোমার সৃষ্টির সবচাইতে হতভাগ্য আমি হতে চাই না। আল্লাহ্ তারক্ষণিক বলবেন, তোমার এটি পূরণ করা হলে তুমি এ ছাড়া কিছু চাইবে না তো? সে বলবে না, আপনার ইযয্তের কসম! এছাড়া আমি আর কিছুই চাইব না। এ ব্যাপারে সে তার ইচ্ছানুযায়ী অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি দেবে। সে যখন জান্নাতের দরজায় পৌঁছবে তখন জান্নাতের অনাবিল সৌন্দর্য ও তার আভ্যন্তরীণ সুখ শান্তি ও আনন্দঘন পরিবেশ দেখতে পাবে। যতক্ষণ আল্লাহ্ তা‘আলা ইচ্ছা করবেন, সে চুপ করে থাকবে। অতঃপর সে বলবে, হে আমার রব! আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দাও! তখন পরাক্রমশালী মহান আল্লাহ্ বলবেনঃ হে আদম সন্তান, কি আশ্চর্য! তুমি কত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী! তুমি কি আমার সঙ্গে অঙ্গীকার করনি এবং প্রতিশ্রুতি দাওনি যে, তোমাকে যা দেওয়া হয়েছে, তাছাড়া আর কিছু চাইবে না? তখন সে বলবে, হে আমার রব! আপনার সৃষ্টির মধ্যে আমাকে সবচাইতে হতভাগ্য করবেন না। এতে আল্লাহ্ হেসে দেবেন। অতঃপর তাকে জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দিবেন এবং বলবেন, চাও। সে তখন চাইবে, এমন কি তার চাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ফুরিয়ে যাবে। তখন পরাক্রমশালী মহান আল্লাহ্ বলবেনঃ এটা চাও, ওটা চাও। এভাবে তার রব তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে থাকবেন। অবশেষে যখন তার আকাঙ্ক্ষা শেষ হয়ে যাবে, তখন আল্লাহ্ তা‘আলা বলবেনঃ এ সবই তোমার, এ সাথে আরো সমপরিমাণ (তোমাকে দেয়া হল)। আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাযি.) আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.)-কে বললেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন যে, আল্লাহ্ তা‘আলা বলবেনঃ এ সবই তোমার, তার সাথে আরও দশগুণ (তোমাকে দেয়া হল)। আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) বললেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে শুধু এ কথাটি স্মরণ রেখেছি যে, এ সবই তোমার এবং এর সাথে সমপরিমাণ। আবূ সা‘ঈদ (রাযি.) বললেন, আমি তাঁকে বলতে শুনেছি যে, এসব তোমার এবং এর সাথে আরও দশগুণ। (৬৫৭৩, ৭৩৩৭ মুসলিম ১/৮১, হাঃ ১৮২, আহমাদ ৭৭২১)

 জাহান্নামবাসীদের মধ্যে জান্নাতে প্রবেশকারী সেই শেষ ব্যক্তি।

 

আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, সাহাবীগণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কি কিয়ামতের দিন আমাদের রবকে দেখতে পাব? তিনি বললেনঃ মেঘমুক্ত পুর্ণিমার রাতের চাঁদকে দেখার ব্যাপারে তোমরা কি সন্দেহ পোষণ কর? তাঁরা বললেন, না, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন, মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখার ব্যাপারে কি তোমাদের কোন সন্দেহ আছে? সবাই বললেন, না। তখন তিনি বললেনঃ নিঃসন্দেহে তোমরাও আল্লাহকে তেমনিভাবে দেখতে পাবে।

 

কিয়ামতের দিন সকল মানুষকে সমবেত করা হবে। অতঃপর আল্লাহ্ তাআলা বলবেন, যে যার উপাসনা করতে সে যেন তার অনুসরণ করে। তাই তাদের কেউ সূর্যের অনুসরণ করবে, কেউ চন্দ্রের অনুসরণ করবে, কেউ তাগুতের অনুসরণ করবে। আর বাকী থাকবে শুধুমাত্র উম্মাহ্, তবে তাদের সাথে মুনাফিকরাও থাকবে। তাঁদের মাঝে সময় আল্লাহ তাআলা আগমন করবেন এবং বলবেনঃ ‘‘আমি তোমাদের রব।’’ তখন তারা বলবে, যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের রবের আগমন না হবে, ততক্ষণ আমরা এখানেই থাকব। আর তার যখন আগমন হবে তখন আমরা অবশ্যই তাঁকে চিনতে পারব। তখন তাদের মাঝে মহান পরাক্রমশালী আল্লাহ্ তাআলা আগমন করবেন এবং বলবেন, ‘‘আমি তোমাদের রব।’’ তারা বলবে, হাঁ, আপনিই আমাদের রব। আল্লাহ্ তাআলা তাদের ডাকবেন। আর জাহান্নামের উপর একটি সেতু স্থাপন করা হবে। রাসূলগণের মধ্যে আমিই সবার আগে আমার উম্মাত নিয়ে পথ অতিক্রম করব। সেদিন রাসূলগণ ব্যতীত আর কেউ কথা বলবে না। আর রাসূলগণের কথা হবেঃ (আল্লাহুম্মা সাল্লিম সাল্লিম) হে আল্লাহ্! রক্ষা করুন, রক্ষা করুন।

 

আর জাহান্নামে বাঁকা লোহার বহু শলাকা থাকবে; সেগুলো হবে সাদান কাঁটার মতো। তোমরা কি সাদান কাঁটা দেখেছ? তারা বলবে, হাঁ, দেখেছি। তিনি বলবেন, সেগুলো দেখতে সাদান* কাঁটার মতোই। তবে সেগুলো কত বড় হবে তা একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া আর কেউ জানে না। সে কাঁটা লোকেরআমল অনুযায়ী তাদের তড়িৎ গতিতে ধরবে। তাদের কিছু লোক ধ্বংস হবেআমলের কারণে। আর কারোর পায়ে যখম হবে, কিছু লোক কাঁটায় আক্রান্ত হবে, অতঃপর নাজাত পেয়ে যাবে। জাহান্নামীদের হতে যাদের প্রতি আল্লাহ্ তাআলা রহমত করতে ইচ্ছা করবেন, তাদের ব্যাপারে মালাইকাহ্কে নির্দেশ দেবেন যে, যারা আল্লাহরইবাদাত করতো, তাদের যেন জাহান্নাম হতে বের করে আনা হয়। মালাইকাহ তাদের বের করে আনবেন এবং সিজদার চিহ্ন দেখে তাঁরা তাদের চিনতে পারবেন। কেননা, আল্লাহ্ তাআলা জাহান্নামের জন্য সিজদার চিহ্নগুলো মিটিয়ে দেয়া হারাম করে দিয়েছেন। ফলে তাদের জাহান্নাম হতে বের করে আনা হবে। কাজেই সিজদার চিহ্ন ছাড়া আগুন বানী আদমের সব কিছুই গ্রাস করে ফেলবে। অবশেষে, তাদেরকে অঙ্গারে পরিণত অবস্থায় জাহান্নাম হতে বের করা হবে। তাদের উপরআবে-হায়াত ঢেলে দেয়া হবে ফলে তারা স্রোতে বাহিত ফেনার উপর গজিয়ে উঠা উদ্ভিদের মত সঞ্জীবিত হয়ে উঠবে। অতঃপর আল্লাহ্ তাআলা বান্দাদের বিচার কাজ সমাপ্ত করবেন কিন্তু একজন লোক জান্নাত জাহান্নামের মাঝখানে থেকে যাবে। তার মুখমন্ডল তখনও জাহান্নামের দিকে ফেরানো থাকবে। জাহান্নামবাসীদের মধ্যে জান্নাতে প্রবেশকারী সেই শেষ ব্যক্তি।

 

সে তখন নিবেদন করবে, হে আমার রব! জাহান্নাম হতে আমার চেহারা ফিরিয়ে দিন। এর দূষিত হাওয়াআমাকে বিষিয়ে তুলছে, এর লেলিহান শিখা আমাকে যন্ত্রণা দিচ্ছে। তখন আল্লাহ্ তাআলা বলবেন, তোমার নিবেদন গ্রহণ করা হলে, তুমি এছাড়া আর কিছু চাইবে না তো? সে বলবে, না, আপনার ইয্যতের শপথ! সে তার ইচ্ছামত আল্লাহ্ তাআলাকে অঙ্গীকার প্রতিশ্রুতি দিবে। কাজেই আল্লাহ তাআলা তার চেহারাকে জাহান্নামের দিক হতে ফিরিয়ে দিবেন। অতঃপর সে যখন জান্নাতের দিকে মুখ ফিরাবে, তখন সে জান্নাতের অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে পাবে। যতক্ষণ আল্লাহর ইচ্ছা সে চুপ করে থাকবে।

 


অতঃপর
সে বলবে, হে আমার রব! আপনি জান্নাতের দরজার নিকট পৌঁছে দিন। তখন আল্লাহ তাআলা তাকে বলবেন, তুমি পূর্বে যা চেয়েছিলে, তা ছাড়া আর কিছু চাইবে না বলে তুমি কি অঙ্গীকার প্রতিশ্রুতি দাওনি? তখন সে বলবে, হে আমার রব! তোমার সৃষ্টির সবচাইতে হতভাগ্য আমি হতে চাই না। আল্লাহ্ তারক্ষণিক বলবেন, তোমার এটি পূরণ করা হলে তুমি ছাড়া কিছু চাইবে না তো? সে বলবে না, আপনার ইযয্তের কসম! এছাড়া আমি আর কিছুই চাইব না। ব্যাপারে সে তার ইচ্ছানুযায়ী অঙ্গীকার প্রতিশ্রুতি দেবে। সে যখন জান্নাতের দরজায় পৌঁছবে তখন জান্নাতের অনাবিল সৌন্দর্য তার আভ্যন্তরীণ সুখ শান্তি আনন্দঘন পরিবেশদেখতে পাবে। যতক্ষণ আল্লাহ্ তাআলা ইচ্ছা করবেন, সে চুপ করে থাকবে। অতঃপর সে বলবে, হে আমার রব! আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দাও! তখন পরাক্রমশালী মহান আল্লাহ্ বলবেনঃ হে আদম সন্তান, কি আশ্চর্য! তুমি কত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী! তুমি কি আমার সঙ্গে অঙ্গীকার করনি এবং প্রতিশ্রুতি দাওনি যে, তোমাকে যা দেওয়া হয়েছে, তাছাড়া আর কিছু চাইবে না? তখন সে বলবে, হে আমার রব! আপনার সৃষ্টির মধ্যে আমাকে সবচাইতে হতভাগ্য করবেন না। এতে আল্লাহ্ হেসে দেবেন। অতঃপর তাকে জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দিবেন এবং বলবেন, চাও। সে তখন চাইবে, এমন কি তার চাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ফুরিয়ে যাবে। তখন পরাক্রমশালী মহান আল্লাহ্ বলবেনঃ এটা চাও, ওটা চাও। এভাবে তার রব তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে থাকবেন। অবশেষে যখন তার আকাঙ্ক্ষা শেষ হয়ে যাবে, তখন আল্লাহ্ তাআলা বলবেনঃ সবই তোমার, সাথে আরো সমপরিমাণ (তোমাকে দেয়া হল) আবূ সাঈদ খুদরী (রাযি.) আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.)-কে বললেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন যে, আল্লাহ্ তাআলা বলবেনঃ সবই তোমার, তার সাথে আরও দশগুণ (তোমাকে দেয়া হল) আবূ হুরাইরাহ (রাযি.) বললেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে শুধু কথাটি স্মরণ রেখেছি যে, সবই তোমার এবং এর সাথে সমপরিমাণ। আবূ সাঈদ (রাযি.) বললেন, আমি তাঁকে বলতে শুনেছি যে, এসব তোমার এবং এর সাথে আরও দশগুণ। (৬৫৭৩, ৭৩৩৭ মুসলিম /৮১, হাঃ ১৮২, আহমাদ ৭৭২১)


ইবনু
আব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাতটি অঙ্গের দ্বারা সিজদা্ করতে এবং চুল কাপড় না গুটাতে নির্দেশিত হয়েছিলেন। (অঙ্গ সাতটি হল) কপাল দু হাত, দু হাঁটু দু পা। (৮১০, ৮১২, ৮১৫, ৮১৬; মুসলিম ৪৩/৪৪, হাঃ ৪৯০, আহমাদ ২৫৮৪)

যে ব্যক্তি সঠিকভাবে রুকূ করেনি তাকে পুনরায় সালাত আদায়েরজন্য নাবী ﷺ-এর নির্দেশ।এ প্রসংগে আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। একসময়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে তাশরীফ আনলেন, তখন এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সালাত আদায় করলো। অতঃপর সে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে সালাম করলো। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সালামের জবাব দিয়ে বললেনঃ তুমি ফিরে গিয়ে সালাত আদায় কর, কেননা, তুমি সালাত আদায় করনি। লোকটি আবার সালাত আদায় করল এবং আবার এসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে সালাম দিল। তিনি বললেনঃ আবার গিয়ে সালাত আদায় কর, কেননা, তুমি সালাত আদায় করনি। এভাবে তিনবার ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল। অতঃপর লোকটি বলল, সে মহান সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন, আমি এর চেয়ে সুন্দর সালাত আদায় করতে জানি না। কাজেই, আপনি আমাকে শিখিয়ে দিন। তখন তিনি বললেনঃ যখন তুমি সালাতে দাঁড়াবে, তখন তাকবীর বলবে। অতঃপর কুরআন হতে যতটুকু তোমার পক্ষে সহজ ততটুকু পড়বে। অতঃপর রুকূতে যাবে এবং ধীরস্থিরভাবে রুকূ আদায় করবে। অতঃপর রুকূ হতে উঠে সোজা হয়ে দাঁড়াবে। ধীরস্থিরভাবে সিজদা্ করবে। অতঃপর সিজদা্ হতে উঠে স্থিরভাবে বসবে এবং পুনরায় সিজদা্য় গিয়ে স্থিরভাবে সিজদা্ করবে। অতঃপর পুরো সালাত এভাবে আদায় করবে।

আবূ সালামাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ সাঈদ খুদরী (রাযি.)-এর নিকট  বললাম, আমাদের সঙ্গে খেজুর বাগানে চলুন, (হাদীস সংক্রান্ত) আলাপ আলোচনা করব। তিনি । আবূ সালামাহ (রাযি.) বলেন, আমি তাকে বললাম, ‘লাইলাতুল কাদর সম্পর্কে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে যা শুনেছেন, তা আমার নিকট বর্ণনা করুন। তিনি বললেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম রমাযানের প্রথম দশ দিন ‘ইতিকাফ করলেন। আমরাও তাঁর সঙ্গে ইতিকাফ করলাম। জিবরীল (‘আ.) এসে বললেন, আপনি যা তালাশ করছেন, তা আপনার সামনে রয়েছে। অতঃপর তিনি মধ্যবর্তী দশদিন ইতিকাফ করলেন, আমরাও তাঁর সঙ্গে ইতিকাফ করলাম। পুনরায় জিবরীল (‘আ.) এসে বললেন, আপনি যা তালাশ করছেন, তা আপনার সামনে রয়েছে। অতঃপর রমাযানের বিশ তারিখ সকালে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুত্বা দিতে দাঁড়িয়ে বললেন, যারা আল্লাহর নবীর সঙ্গে ইতিকাফ করেছেন, তারা যেন ফিরে আসেন (আবার ইতিকাফ করেন) কেননা, আমাকে স্বপ্নে লাইলাতুল কাদ্র অবগত করানো হয়েছে। তবে আমাকে তা (নির্ধারিত তারিখটি) ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। নিঃসন্দেহে তা শেষ দশ দিনের কোন এক বেজোড় তারিখে। স্বপ্নে দেখলাম যেন আমি কাদা ও পানির উপর সিজদা্ করছি। তখন মসজিদের ছাদ খেজুরের ডাল দ্বারা নির্মিত ছিল। আমরা আকাশে কোন কিছুই (মেঘ) দেখিনি, একখন্ড হালকা মেঘ আসল এবং আমাদের উপর (বৃষ্টি) বর্ষিত হল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। এমন কি আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কপাল ও নাকের অগ্রভাগে পানি ও কাদার চিহ্ন দেখতে পেলাম। এভাবেই তাঁর স্বপ্ন সত্যে রূপ লাভ করল।


খন্দকার
নাজনীন সুলতানা ,

লেখক, সাংবাদিক।

No comments:

Post a Comment