Tuesday 3 October 2023

তোমরা পায়খানা বা পেশাব করতে কিবলা মুখী হবে না।

 আযানের সময়  মুআয্যিন যা বলে তোমরাও তাই বলবে।   পরিপূর্ণভাবে সিজদা  করা উচিত

কিবলামুখী হবার সময় পায়ের আঙ্গুলকেও কিবলামুখী রাখতে হবে।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা পায়খানা বা পেশাব করতে ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)মুখী হবে না।

মহান আল্লাহর বাণীঃ মাকামে ইবরাহীমকে সালাতের স্থানরূপে গ্রহণ কর। (সূরাহ্ আল-বাক্বারাহ /১২৫)

যেখানেই হোক (সালাতে) কিবলামুখী হতে হবে।                           

আল্লাহ্ তাআলার বাণীঃ ’’আর যখন তোমরা সালাতের জন্য আহবান কর, তখন তারা একে হাসি-তামাশা খেলা বলে মনে করে। কারণ তারা এমন লোক যাদের বোধশক্তি নেই-’’ (সূরাহ্ আল-মায়িদাহ /৫৮) আল্লাহ্ তাআলা আরো বলেছেনঃ ’’আর যখন জুমুআর দিনে সালাতের জন্য ডাকা হয়।’’ (সূরাহ্ আল-জুমুআহ ৬২/)


আল্লাহর
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমরা আযান শুনতে পাও তখনমুআয্যিন যা বলে তোমরাও তাই বলবে।

আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন; মুসলিমগণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে তাঁরা সালাতের সময়ের জন্য এমন কোন সংকেত নির্ধারণ করার প্রস্তাব দিলেন, যার সাহায্যে সালাতের সময় উপস্থিত কথা বুঝা যায়। কেউ কেউ বললেন, আগুন জ্বালানো হোক, কিংবা ঘণ্টা বাজানো হোক। তখন বিলাল (রাযি.)-কে আযানের শব্দগুলো দু দুবার এবং ইকামাতের শব্দগুলো বেজোড় বলার নির্দেশ দেয়া হলো।

আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন সালাতের জন্য আযান দেয়া হয়, তখন শয়তান হাওয়া ছেড়ে পলায়ন করে, যাতে সে আযানের শব্দ না শোনে। যখন আযান শেষ হয়ে যায়, তখন সে আবার ফিরে আসে। আবার যখন সালাতের জন্য ইক্বামাত(ইকামত/একামত) বলা হয়, তখন আবার দূরে সরে যায়। ইক্বামাত(ইকামত/একামত) শেষ হলে সে পুনরায় ফিরে এসে লোকের মনে কুমন্ত্রণা দেয় এবং বলে এটা স্মরণ কর, ওটা স্মরণ কর, বিস্মৃত বিষয়গুলো সে মনে করিয়ে দেয়। এভাবে লোকটি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, সে কয় রাকআত সালাত আদায় করেছে তা মনে করতে পারে না। ( মুসলিম /, হাঃ ৩৮৯, আহমাদ ৯৯৩৮)

সময় বলে দেয়ার লোক থাকলে অন্ধ ব্যক্তি আযান দিতে পারে।

মালিক ইবনু হুয়াইরিস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার গোত্রের কয়েকজন লোকের সঙ্গে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এলাম এবং আমরা তাঁর নিকট বিশ রাত অবস্থান করলাম। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত দয়ালু বন্ধু বৎসল ছিলেন। তিনি যখন আমাদের মধ্যে নিজ পরিজনের নিকট ফিরে যাওয়ার আগ্রহ লক্ষ্য করলেন, তখন তিনি আমাদের বললেনঃ তোমরা পরিজনের নিকট ফিরে যাও এবং তাদের মধ্যে বসবাস কর, আর তাদের দ্বীন শিক্ষা দিবে এবং সালাত আদায় করবে। যখন সালাত উপস্থিত হয়, তখন তোমাদের কেউ আযান দিবে এবং তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বয়সে বড় সে ইমামত করবে। (মুসলিম /৫৩, হাঃ ৬৭৪, আহমাদ ১৫৫৯৮)

মালিক ইবনু হুওয়ায়রিস (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, দুজন লোক সফরে যাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করার জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেনঃ তোমরা উভয়ে যখন সফরে বেরুবে (সালাতের সময় হলে) তখন আযান দিবে, অতঃপর ইক্বামাত(ইকামত/একামত) দিবে এবং তোমাদের উভয়ের মধ্যে যে বয়সে বড় সে ইমামত করবে।

নাফি (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রচন্ড এক শীতের রাতে ইবনুউমার (রাযি.) যাজনান নামক স্থানে আযান দিলেন। অতঃপর তিনি ঘোষণা করলেনঃ তোমরা আবাস স্থলেই সালাত আদায় করে নাও। পরে তিনি আমাদের জানালেন যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফরের অবস্থায় বৃষ্টি অথবা তীব্র শীতের রাতে মুয়ায্যিনকে আযান দিতে বললেন এবং সাথে সাথে কথাও ঘোষণা করতে বললেন যে, তোমরা নিজ বাসস্থলে সালাত আদায় কর। ( মুসলিম /, হাঃ ৬৯৭, আহমাদ ৪৫৮০)

সালাতের (জামাআতের) দিকে দৌড়ে আসবে না, বরং শান্তি ধীরস্থিরভাবে আসবে।

আবূ কাতাদাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সঙ্গে সালাত আদায় করছিলাম। হঠাৎ তিনি লোকদের (আগমনের) আওয়ায শুনতে পেলেন। সালাত শেষে তিনি জিজ্ঞেস করলেন তোমাদের কী হয়েছিল? তাঁরা বললেন, আমরা সালাতের জন্য তাড়াহুড়া করে আসছিলাম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এরূপ করবে না। যখন সালাতে আসবে ধীরস্থিরভাবে আসবে (ইমামের সাথে) যতটুকু পাও আদায় করবে, আর যতটুকু ছুটে যায় তা (ইমামের সালাম ফিরানোর পর) পূর্ণ করবে। (মুসলিম /২৮, হাঃ ৬০৩, আহমাদ ২২৬৭১)

পরিপূর্ণভাবে সিজদা না করা উচিত নয়।

কিবলামুখী হবার সময় পায়ের আঙ্গুলকেও কিবলামুখী রাখতে হবে।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা পায়খানা বা পেশাব করতে ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)মুখী হবে না।

মহান আল্লাহর বাণীঃ মাকামে ইবরাহীমকে সালাতের স্থানরূপে গ্রহণ কর। (সূরাহ্ আল-বাক্বারাহ /১২৫)

যেখানেই হোক (সালাতে) কিবলামুখী হতে হবে।

আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের ন্যায় সালাত আদায় করে, আমাদের ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)হমুখী হয় আর আমাদের যবেহ করা প্রাণী খায়, সে- মুসলিম, যার জন্য আল্লাহ তাঁর রাসূল যিম্মাদার। সুতরাং তোমরা আল্লাহর যিম্মাদারীতে বিশ্বাসঘাতকতা করো না।

আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘উমার (রাযি.) বলেছেনঃ তিনটি বিষয়ে আমার অভিমত আল্লাহর ওয়াহীর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়েছে। আমি বলেছিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা যদি মাকামে ইব্রাহীমকে সালাতের স্থান বানাতে পারতাম! তখন আয়াত নাযিল হয়ঃ ‘‘তোমরা মাকামে ইব্রাহীমকে সালাতের স্থান বানাও’’- (সূরাহ্ আল-বাক্বারাহ /১২৫) (দ্বিতীয়) পর্দার আয়াত, আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! আপনি যদি আপনার সহধর্মিণীগণকে পর্দার আদেশ করতেন! কেননা, সৎ অসৎ সবাই তাঁদের সাথে কথা বলে। তখন পর্দার আয়াত নাযিল হয়। আর একবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর সহধর্মিণীগণ অভিমান সহকারে একত্রে তাঁর নিকট উপস্থিত হন। তখন আমি তাঁদেরকে বললামঃ ‘‘আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি তোমাদের ত্বলাক (তালাক) দেন, তাহলে তাঁর রব তাঁকে তোমাদের পরিবর্তে তোমাদের চেয়ে উত্তম অনুগত স্ত্রী দান করবেন’’- (সূরাহ্ তাহরীম ৬৬/) তখন আয়াত অবতীর্ণ হয়।

ভুলবশত কিবলার পরিবর্তে অন্যদিকে মুখ করে সালাত আদায় করলে তা পুনরায় আদায় করা যাদেরমতে আবশ্যকীয় নয়।

আবদুল্লাহ ইবনুউমার (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা লোকেরা কুবা নামক স্থানে ফজরের সালাত আদায় করছিলেন। এমন সময় তাদের নিকট এক ব্যক্তি এসে বললেন যে, রাতে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর প্রতি ওয়াহী অবতীর্ণ হয়েছে। আর তাঁকে কাবামুখী হবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কাজেই তোমারা কাবার দিকে মুখ কর। তখন তাঁদের চেহারা ছিল শামের (বায়তুল মুকাদ্দাসের) দিকে। একথা শুনে তাঁরা কাবার দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। ( মুসলিম /, হাঃ ৫২৬)

আবদুল্লাহ (ইবনু মাসঊদ) (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের সালাত পাঁচ রাকআত আদায় করেন। তখন মুসল্লীগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ সালাতে কি কিছু বৃদ্ধি করা হয়েছে? তিনি বললেনঃ তা কী? তারা বললেনঃ আপনি যে পাঁচ রাকআত সালাত আদায় করেছেন। রাবী বলেন, তিনি নিজের পা ঘুরিয়ে (ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)মুখী হয়ে) দু সিজদা (সিজদা সাহু) করে নিলেন।

আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)হর দিকে (দেয়ালে) ‘কফ দেখলেন। এটা তাঁর নিকট কষ্টদায়ক মনে হলো। এমনকি তাঁর চেহারায় তা ফুটে উঠলো। তিনি উঠে গিয়ে তা হাত দিয়ে পরিষ্কার করলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ তোমাদের কেউ যখন সালাতে দাঁড়ায় তখন সে তার রবের সাথে একান্তে কথা বলে। অথবা বলেছেন, তার ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)হর মাঝখানে তার রব আছেন। কাজেই, তোমাদের কেউ যেন ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)হর দিকে থুথু না ফেলে। বরং সে যেন তার বাম দিকে অথবা পায়ের নীচে তা ফেলে। অতঃপর চাদরের আঁচল নিয়ে তাতে তিনি থুথু ফেললেন এবং তার এক অংশকে অন্য অংশের উপর ভাঁজ করলেন এবং বললেনঃ অথবা সে এমন করবে। (২৪১; মুসলিম /১৩, হাঃ ৫৫১, আহমাদ ১২৮০৯)

আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তাআলা এমন ব্যক্তির প্রতি জাহান্নামহারাম করে দিয়েছেন, যে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশেলা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ বলে।

আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) আবূ সাঈদ (খুদরী) (রাযি.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদের দেয়ালে কফ দেখলেন। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছু কাঁকর নিলেন এবং তা মুছে ফেললেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ তোমাদের কেউ কফ ফেললে তা যেন সে সামনে অথবা ডানে না ফেলে। বরং সে বাম দিকে কিংবা বাম পায়ের নীচে ফেলে। (৪০৮, ৪০৯; মুসলিম /১৩, হাঃ ৫৪৮, আহমাদ ১১০২৫) মুসলিম /১৩, হাঃ ৫৪৮, আহমাদ ১১০২৫)

আবূ হুরাইরাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা কি মনে কর যে, আমার দৃষ্টি (কেবল) ক্বিবলা (কিবলা/কেবলা)হর দিকে? আল্লাহর কসম! আমার নিকট তোমাদের খূশু (বিনয়) রুকূ কিছুই গোপন থাকে না। অবশ্যই আমি আমার পেছন হতেও তোমাদের দেখতে পাই। (৭৪১; মুসলিম /২৪, হাঃ ৪২৪, আহমাদ ৮০৩০)

আয়িশাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের সমস্ত কাজে যথাসম্ভব ডানদিক হতে আরম্ভ করা পছন্দ করতেন। তাহারাত অর্জন, মাথা আঁচড়ানো এবং জুতা পরার সময়ও।

 খন্দকার নাজনীন সুলতানা ,

লেখক , সাংবাদিক। 



No comments:

Post a Comment