Sunday 1 October 2023

কাজের বরকত আসে নিয়ত অনুযায়ী

নিয়ত অনুযায়ী বরকত পাওয়া কেউ যদি কোন ওয়াক্তের সালাত আদায় করতে ভুলে যায়, তাহলে যখন স্মরণ হবে, তখন সে তা আদায় করে নিবে।

একাধিক সালাতের কাযা ক্রমান্বয়ে আদায় করা যায়।

জাবির (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, খন্দকের যুদ্ধকালে এক সময় ‘উমার (রাযি.) কুরাইশ কাফিরদের তিরস্কার করতে লাগলেন এবং বললেন,  পূর্বে আমি ‘আসরের সালাত আদায় করতে পারিনি, [জাবির (রাযি.) বলেন] অতঃপর আমরা বুতহান উপত্যকায় উপস্থিত হলাম। সেখানে তিনি সূর্যাস্তের পর সে সালাত আদায় করলেন, তার পরে মাগরিবের সালাত আদায় করলেন।


আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কেউ
 কোনো সালাতের কথা ভুলে যায়, তাহলে যখনই স্মরণ হবে, তখন তাকে তা আদায় করতে হবে, আউওয়াল ওয়াক্ত ব্যাতীত।  এ ছাড়া সে সালাতের অন্য কোনো কাফ্ফারা নেই। (কেননা, আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেছেন) ‘‘আমাকে স্মরণের উদ্দেশে সালাত কায়িম কর’’- (সূরাহ্ ত্বা-হা ২০/১৪)।আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের পর সূর্য উজ্জ্বল হয়ে না উঠা পর্যন্ত এবং ‘আসরের পর সূর্য অস্তমিত না হওয়া পর্যন্ত সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সালাত আদায়ের উদ্যোগ না নেয়।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ‘আসরের সালাত ছেড়ে দেয় তার সমস্ত ‘আমল বিনষ্ট হয়ে যায়।


আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি
 কেউ কোনো সালাতের কথা ভুলে যায়, তাহলে যখনই স্মরণ হবে, তখন তাকে তা আদায় করতে হবে। এ ব্যতীত সে সালাতের অন্য কোনো কাফ্ফারা নেই। (কেননা, আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেছেন) ‘‘আমাকে স্মরণের উদ্দেশে সালাত কায়িম কর’’- (সূরাহ্ ত্বা-হা ২০/১৪)।

কুররাহ ইবনু খালিদ (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা হাসান বসরী (রহ.)-এর অপেক্ষায় ছিলাম। তিনি এতো বিলম্বে আসলেন যে, নিয়মিত সালাত শেষে চলে যাওয়ার সময় ঘনিয়ে আসলো। এরপর তিনি এসে বললেন, আমাদের এ প্রতিবেশীগণ আমাদের ডেকেছিলেন। অতঃপর তিনি বললেন, আনাস ইবনু মালিক (রাযি.) বর্ণনা করেছেন, এক রাতে আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর অপেক্ষায় ছিলাম। এমন কি প্রায় অর্ধেক রাত হয়ে গেলো, তখন এসে তিনি আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন। অতঃপর আমাদের সম্বোধন করে তিনি বললেনঃ জেনে রাখ! লোকেরা সালাত আদায় করে ঘুমিয়ে পড়েছে, তবে তোমরা যতক্ষণ সালাতের অপেক্ষায় ছিলে ততক্ষণ সালাতেই রত ছিলে। হাসান (বসরী (রহ.) বলেন, মানুষ যতক্ষণ কল্যাণের অপেক্ষায় থাকে, ততক্ষণ তারা কল্যাণেই রত থাকে। কুর্রা (রহ.) বলেন, এ উক্তি আনাস (রাযি.) কর্তৃক বর্ণিত আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর হাদীসেরই অংশ।

ইশার সালাতের পর গল্প গুজব করা মাকরূহ।


আবদুর রহমান ইবনু আবূ বকর (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, আসহাবে সুফ্ফা ছিলেন খুবই দরিদ্র। (একদা) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যার নিকট দুজনের আহার আছে সে যেন (তাঁদের হতে) তৃতীয় জনকে সঙ্গে করে নিয়ে যায়। আর যার নিকট চারজনের আহারের সংস্থান আছে, সে যেন পঞ্চম বা ষষ্ঠজনকে সঙ্গে নিয়ে যায়। আবূ বকর (রাযি.) তিনজন সাথে নিয়ে আসেন এবং আল্লাহর রাসূল দশজন নিয়ে আসেন। আবদুর রহমান (রাযি.) বলেন, আমাদের ঘরে এবং আবূ বকরের ঘরে আমি, আমার পিতা ও মাতা (এই তিন জন সদস্য) ছিলাম। রাবী বলেন, আমি জানি না, তিনি আমার স্ত্রী এবং খাদিম একথা বলেছিলেন কি-না? আবূ বকর (রাযি.) আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর ঘরেই রাতের আহার করেন, এবং ‘ইশার সালাত পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন। ‘ইশা সালাতের পর তিনি আবার (রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর ঘরে) ফিরে আসেন এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর রাতের আহার শেষ করা পর্যন্ত সেখানেই অবস্থান করেন। আল্লাহর ইচ্ছায় রাতের কিছু সময় অতিবাহিত হবার পর বাড়ি ফিরলে তাঁর স্ত্রী তাঁকে বললেন, মেহমানদের নিকট আসতে কিসে আপনাকে ব্যস্ত রেখেছিল? কিংবা তিনি বলেছিলেন, (বর্ণনাকারীরসন্দেহ) মেহমান হতে। আবু বাকর (রাযি.) বললেন, এখনও তাদের খাবার দাওনি? তিনি বললেন, আপনি না আসা পর্যন্ত তারা খেতে অস্বীকার করেন। তাদের সামনে উপস্থিত করা হয়েছিল, তবে তারা খেতে সম্মত হননি। ‘আবদুর রহমান (রাযি.) বলেন, (পিতার তিরস্কারের ভয়ে) আমি সরে গিয়ে আত্মগোপন করলাম। তিনি (রাগান্বিত হয়ে) বললেন, ওরে বোকা এবং ভৎর্সনা করলেন। আর (মেহমানদের) বললেন, খেয়ে নিন। আপনারা অস্বস্তিতে ছিলেন। অতঃপর তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! আমি এ কখনই খাব না। ‘আবদুর রহমান (রাযি.) বলেন, আল্লাহর কসম! আমরা লোক্মা উঠিয়ে নিতেই নীচ হতে তা অধিক পরিমাণে বেড়ে যাচ্ছিল। তিনি বলেন, সকলেই পেট ভরে খেলেন। অথচ পূর্বের চেয়ে অধিক খাবার রয়ে গেলো। আবূ বকর (রাযি.) খাবারের দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলেন তা পূর্বের সমপরিমাণ কিংবা তার চাইতেও বেশি। তিনি তাঁর স্ত্রীকে বললেন, হে বানূ ফিরাসের বোন। একি? তিনি বললেন, আমার চোখের প্রশান্তির কসম! এতো এখন পূর্বের চেয়ে তিনগুণ বেশি! আবূ বকর (রাযি.)-ও তা হতে আহার করলেন এবং বললেন, আমার সে শপথ শয়তানের পক্ষ হতেই হয়েছিল। অতঃপর তিনি আরও লুক্মা মুখে দিলেন এবং অবশিষ্ট খাবার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকটে নিয়ে গেলেন। ভোর পর্যন্ত সে খাদ্য আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর কাছেই ছিল। এদিকে আমাদের ও অন্য একটি গোত্রের মাঝে যে সন্ধি ছিলো তার সময়সীমা পূর্ণ হয়ে যায়। (এবং তারা মদিনা্য় আসে) আমরা তাদের বারজনের নেতৃত্বে ভাগ করে দেই। তাদের প্রত্যেকের সঙ্গেই কিছু কিছু লোক ছিলো। তবে প্রত্যেকের সঙ্গে কতজন ছিল তা আল্লাহ্ই জানেন। তারা সকলেই সেই খাদ্য হতে আহার করেন। (রাবী বলেন) কিংবা ‘আবদুর রহমান (রাযি.) যেভাবে বর্ণনা করেছেন। (মুসলিম ৩৬/৩২, হাঃ ২০৫৭, আহমাদ ১৭০৪)

খন্দকার নাজনীন সুলতানা ,

লেখক, সাংবাদিক।

#Islam  #Hadis #Article #Hazrat Muhammed (SAW) ##ইসলাম #হাদিস #নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম

No comments:

Post a Comment