Friday 23 August 2013

প্রথম মানব হযরত আদম (আঃ)এর সৃষ্টি

মহান আল্ল¬াহ তা’আলা এই পৃথিবীতে বহু সংখক নবী ও রসূল পাঠিয়েছেন। সমস্ত নবীদের মধ্যে হযরত আদম (আঃ) সর্ব প্রথম নবী। তিনি মানবজাতির আদি পিতা।
সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, হযরত আদম (আঃ) এর মা বাবা কেউই ছিলেন না। তাঁকে আল্ল¬াহ তা’লা নিজ কুদরতের সাহায্যে মাটি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন।


বিশ্বজগতকে আল্ল¬াহ তা’আলা পূর্বেই সৃষ্টি করেছেন। তারপর তৈরী করেছেন ফেরেশতাদের। ফেরেশতাদেরা হলেন নূর বা আলোর তৈরী। তাঁরা অত্যন্ত পবিত্র। সমস্ত পাপ, পণি‹লতা, নাফরমানি ও মন্দ হতে মুক্ত। তাঁরা অত্যন্ত উন্নতমানের রোবটের ন্যায়। যে ফেরেশতা যে কাজের জন্য নিয়োজিত, উনি সে কাজই করতে থাকেন। আল্ল¬াহ্র হুকুমের বিন্দুমাত্র বরখেলাপ করাও তাঁদের স্বভাব বিরুদ্ধ। তাঁরা সর্বদা মহান সৃষ্টিকর্তা আল্ল¬াহ তা’আলার ফর্মাবরদারী, আজ্ঞাবহনকারী ও তাঁর এবাদত বন্দেগী, প্রশংসা ও মহিমা জপ করে থাকেন। এটাই তাঁদের সৃষ্টিগত স্বভাব।

একসময় সৃষ্টিকর্তা মহান আল্ল¬াহ তা’আলার ইচ্ছে হল দুনিয়াতে একজন খলিফা বা প্রতিনিধি সৃষ্টি করবেন। তিনি তাঁর ইচ্ছার কথা ফেরেশতাদের কাছে প্রকাশ করলেন। তখন ফেরেশতারা বললেন,   ’আপনি কি দুনিয়াতে এমন জাতি সৃষ্টি করতে চান, যারা সেথায় ফেতনা-ফাসাদ ও খুন- খারাবী করবে? অথচ আমরাইতো আপনার মহিমা জপ ও পবিত্রতা বয়ান করে থাকি’। আল্ল¬াহ তা’আলা বললেন, ‘আমি যা জানি, তোমরা তা জান না।’

মূলত: আল¬াহ্র ইচ্ছে ছিল তাঁর খলিফা বা প্রতিনিধি সৃষ্টি করা। কারন, ফেরেশতাদের মাঝে আল্ল¬াহ  তা’আলা খেলাফত বা প্রতিনিধিত্বের যোগ্যতা দেননি। সে লক্ষেই তিনি আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করতে উদ্দ্যোগী হলেন।

ভূমন্ডলের বিভিন্ন অংশ হতে ভিন্ন ভিন্ন রকমের মাটি- (যেমন: লাল, সাদা, কাল, নরম, শক্ত, ভালো, মন্দ) একটু একটু নিলেন। সে মাটিকে প্রথমে কুমারের মাটির মতো চটচটে আঠালো করা হলো, তারপর শুকানো হলো। মাটি যখন পূর্ণ শুষ্ক হলো, আগুনে পোড়া মাটির পাত্রের ন্যায় করাঘাতে খন খন করে বেজে ওঠে, তেমন মাটি দিয়ে আল্ল¬াহ  তা’আলা বিশেষ কুদরতবলে আদম (আঃ) এর আকৃতি বা দেহ-কাঠামো তৈরী করলেন। তারপর আল্ল¬াহ  আদেশ করলেন ‘কুন- হয়ে যাও’ সঙ্গে সঙ্গে মাটির তৈরী আদম (আঃ) জীবন্ত হয়ে গেলেন। 

আল্ল¬াহ জ্বীনদের তৈরী করেছেন আগুন দিয়ে। আর মানুষকে তৈরী করেছেন দুর্গন্ধযুক্ত কাদা-মাটি হতে। আল্ল¬াহ আদম (আঃ) কে ষাট হাত লম্বা ( বর্তমানের সাধারন মানুষের হাতের মাপে ) মানুষ রুপে বানিয়েছিলেন । তাই বেহেস্তের সব মানুষও আমাদের আদি পিতার মতো ষাট হাত লম্বাই হবে।
-----------------------------------------------------------------------------------
তথ্যসুত্রঃ
আল-্কোরআন:
পারা; ২৪ রুকু ১৩, পারা; ১  রুকু ৪, পারা; ১৪ রুকু  ৩, পারা; ২৩ রুকু ১৪, পারা; ৩  রুকু  ১৪,পারা; ২৭ রুকু  ১১, পারা; ২১ রুকু  ১৪।
বুখারী শরীফ; হাদীস নং ১৬২০, মেশকাত শরীফ।
---------------------------------------------------------------------------
প্রকাশ ঃ  দৈনিক ইনকিলাব;
সোমবার, ২১ কার্তিক, ১৪১৫, ২৭ অক্টোবর ২০০৮।
----------------------------------

By 
Khandaker Nazneen Sultana, Journalist

No comments:

Post a Comment